সশরীরে পরীক্ষা চেয়ে শিক্ষার্থীদের ‘প্রতীকী পরীক্ষা’ কর্মসূচি
৩ জুন ২০২১ ১১:৩০
রংপুর: করোনা সংক্রমণের কারণে স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো অবিলম্বে অনলাইনের বদলে সশরীরে নেওয়ার দাবিতে প্রতীকী পরীক্ষা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া চত্ত্বরে শিক্ষার্থীরা ওই প্রতীকী পরীক্ষায় অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে প্রতীকী পরীক্ষা নেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক এবং লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক আসাদ মন্ডল।
এর আগে, ১১ মে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করা হয় এবং ৭৮তম সিন্ডিকেট সভায় তা অনুমোদন দেওয়া হয়।
বুধবার (২ জুন) দিবাগত রাতে রেজিস্ট্রারের সই করা এক অফিস আদেশের মাধ্যমে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তারপর থেকেই শিক্ষার্থীরা স্থগিত পরীক্ষাগুলো সশরীরের পরীক্ষা নেওয়া এবং আবাসিক হল-ক্যাম্পাস খোলার দাবি জানিয়ে নানান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তার অংশ হিসেবেই প্রতীকী পরীক্ষার কর্মসূচি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
প্রতীকী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এমন কয়েকজন শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, করোনার কারণে চলমান পরীক্ষাগুলো হুট করে স্থগিত ঘোষণা করায় তারা নতুন করে আরও দেড় বছরের সেশনজটে পড়েছেন।
পাশাপাশি, অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে পুনরায় সশরীরে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে বেরোবি’র শিক্ষক মাহামুদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার মতো কোন পাবলিক পরীক্ষা নয়। এক সিমেস্টারে পরীক্ষায় অংশ নেন ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী। একসঙ্গে সব ব্যাচের পরীক্ষা নেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, গবেষণা করে ইউজিসি এতদিনে সিদ্ধান্ত দিলো অনলাইনে অথবা সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার আর বেরোবি সিদ্ধান্ত দিলো অনলাইনে পরীক্ষার।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বেরোবি’র নিজস্ব সফটওয়্যার আছে কি? শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার মতো প্রযুক্তি (ডিভাইস, স্পীডি ইন্টারনেট, পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যুৎ সরবরাহ) আছে কি? অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সময়েই শিক্ষার্থীদের নানান সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাড়ি গ্রামে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা গ্রামেই অবস্থান করছেন। গ্রামে ইন্টারনেটের গতি নেই বললেই চলে। তার মধ্যে অনেক শিক্ষার্থীরই স্মার্টফোন নেই। এমন অবস্থায় অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শ্রেণিকক্ষেই যেনো পরীক্ষা নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ আহমেদ বলেন, অনলাইনে পরীক্ষা নানান জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে। তাই, সশরীরে পরীক্ষা নেওয়াই হবে একমাত্র সমাধান।
সারাবাংলা/একেএম