গোপালগঞ্জে সম্প্রসারণ হচ্ছে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা
৫ জুন ২০২১ ০৮:৩০
গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ জেলায় নিরাপদ পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য গোপালগঞ্জ জেলার পল্লী এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নিচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পানির একক উৎস, গ্রামীণ পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই ও বিভিন্ন ধরনের পানি বিশোধনাগার ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি ৫০ জনের জন্য একটি করে নিরপদ পানির উৎস নিশ্চিত করা হবে। পাবলিক টয়লেট ও স্যানিটারী ল্যাট্রিন নির্মাণের মাধ্যমে গ্রামীণ স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর হতে শুরু হয়ে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
এ বিষয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবার জন্য টেকসই পদ্ধতিতে নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। তাই ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম গুলোকে পর্যায়ক্রমে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, পিট ল্যাট্রিনকে ধীরে ধীরে উন্নত ল্যাট্রিনে প্রতিস্থাপিত করে উন্নত ল্যাট্রিন ব্যবহারের কভারেজ ৬১ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে।’
সূত্র জানায়, সকলের জন্য নিরাপদ পানীয় জল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের একটি অঙ্গীকার। গোপালগঞ্জ জেলার সদর, মুকসুদপুর, কাশিয়ানি, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গীপাড়া ৫টি জনবহুল উপজেলা যার আয়তন যথাক্রমে ৩৯১ দশমিক ৪০, ২৯৯ দশমিক ৬০, ৩৬২ দশমিক শূন্য, ১ , ১২৭ দশমিক ২০ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা যথাক্রমে ৩ লাখ ১২ হাজার ৮৫৬, ২ লাখ ৮৮ হাজার ৩০৪, ২ লাখ ২১ হাজার ৯৪০, ২ লাখ ২৮ হাজার ৪০৮ ও ৯৮ হাজার ৭৫৮ জন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপদ পানির উৎস না থাকায় ওই এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী পুকুর, নদীনালা ও খালবিল হতে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার এবং পান করে থাকে। ফলে প্রতি বছর নানা রকম পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পতিত হয়।
তাই নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন সুবিধাদি দেওয়ার জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ সদর, মুকসুদপুর, কাশিয়ানি, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় মোট ৩ হাজার ২০৯টি গভীর নলকূপ, ২২২টি সাবমার্সিবল পাম্প ও জলাধারসহ গভীর নলকুপ, ৩০টি পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই স্কীম, ১৫টি রির্ভাস অসমোসিস প্ল্যান্ট, ১ হাজার ১৩৯টি নলকুপসহ আর্সেনিক আয়রণ রিমোভাল প্ল্যান্ট, ৩৫টি পাবলিক টয়লেট ও ৬ হাজার ২৪০টি অফসেট টুইন পিট ল্যাট্রিনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গোপালগঞ্জ জেলার গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানি, মুকসুদপুর, টুঙ্গীপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার পল্লী এলাকায় নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কভারেজ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।’
সারাবাংলা/জেজে/একে