সড়কের ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান প্রসব, অন্যের আশ্রয়ে নবজাতক
৮ জুন ২০২১ ১৪:২৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী। থাকেন সড়কে-ফুটপাতে। গর্ভবতী ওই নারী সড়কেই প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক ছেলে। কিন্তু নারীর ভারসাম্যহীন আচরণের কারণে অনিরাপদ হয়ে পড়ে সদ্যোজাত শিশুটি। এমনকি প্রসূতির চিকিৎসাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
শেষপর্যন্ত এক দম্পতির বদান্যতায় আপাতত তাদের কাছেই ঠাঁই হয়েছে নবজাতকের। আর তাকে জন্ম দেওয়া নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানসিক রোগের ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯ এ তথ্য পেয়ে সোমবার (৭ জুন) বিকেলে নগরীর হালিশহর থানার নয়াবাজার বিশ্বরোডের কাঁচাবাজারের সামনে থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) শাহ মো. আব্দুর রউফ।
পুলিশ জানায়, বিকেল চারটার দিকে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে ওই নারী সড়কে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। লাইটহাউজ কনসোর্টিয়াম নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক পরিচয় দিয়ে একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। তখন ওই এলাকায় হালিশহর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সতেজ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি টিম টহল দিচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ব্র্যাক মেটারনিটি সেন্টারে ভর্তি করেন। সেখানে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন ওই নারী।
এরপর পুলিশ সদস্যরা লাইটহাউজ কনসোর্টিয়ামের কর্মী শারমিনের তত্ত্বাবধানে নবজাতক ও প্রসূতির উন্নত চিকিৎসার জন্য আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মা ও শিশু হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই নারীর জ্ঞান ফেরে। এরপর সে মানসিকভাবে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। ডাক্তার-নার্সরা কেউ কাছেই ঘেঁষতে পারছিলেন না। নবজাতককেও চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছিল না। তখন আমাদের অনুরোধে নয়াবাজার এলাকার দম্পতি নবজাতককে আপাতত তাদের হেফাজতে নেন। নবজাতক এখন সুস্থ আছে।’
‘আজ (মঙ্গলবার) ভোর ৬টার দিকে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশের টিম। সেখানেও সে একই ধরনের আচরণ শুরু করলে তাকে মানসিক রোগের ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
নবজাতকের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি রফিকুল ইসলাম।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম