Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লিংক রোডের দু’পাশের পাহাড়ের বসতি উচ্ছেদ শুরু ১৪ জুন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ জুন ২০২১ ২৩:০২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আসন্ন বর্ষা মৌসুমে প্রাণহানিসহ যেকোনো ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি সংক্রান্ত উপ-কমিটির সভায় আগামী ১৪ জুন থেকে উচ্ছেদ শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

বুধবার (৯ জুন) দুপুরে পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রামের সম্মেলন কক্ষে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি সংক্রান্ত উপ-কমিটির সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী। বক্তব্য দেন অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মফিদুল আলম। এছাড়া জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সেবা সংস্থা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, নগরীর বায়েজিদ–ফৌজদারহাট লিংক সড়কের দু’পাশের পাহাড়ে অভিযান দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হবে। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে এই কর্মসূচি চলবে।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক নুরুল্লাহ নুরী বলেন, ‘বায়েজিদ সড়কের আশপাশে যেসব পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সেখান থেকে বসতি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৪ জুন থেকে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পাহাড়ে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করা হবে। তবে যেসব পাহাড়ের বিষয়ে মামলা রয়েছে, সেগুলোর উচ্ছেদ আপাতত বন্ধ থাকবে। উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পাহাড় কেটে তৈরি করা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডে বিপর্যয়ের আশঙ্কায় যানবাহন চলাচল ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সড়কটি নির্মাণের জন্য সিডিএ ছোট-বড় ১৮টি পাহাড় কেটেছে। এর মধ্যে অন্তত আটটি পাহাড়ে আছে কয়েক’শ অবৈধ বসতি।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিডিএর কেটে ফেলা পাহাড়সহ নগরীতে এখন মোট ২৫টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে। অতিবৃষ্টিতে ধসের আশংকা তৈরি হয়েছে এসব পাহাড়ে। ঘটতে পারে প্রাণহানিও।

২০১৯ সালে সরকারিভাবে গঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি চট্টগ্রামে বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের তালিকা করেছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রামে মোট ১৭টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে। এর মধ্যে ১০টি ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়। বাকি সাতটি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার। এসব সংস্থার মধ্যে আছে- রেলওয়ে, চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত বিভাগ, বন বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালের তালিকায় ১৭টি পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য চিহ্নিত করা হয়।

২০০৭ সালে পাহাড় ধসে চট্টগ্রামে বড়ধরনের মর্মান্তিক বিপর্যয় ঘটে। ওই বছরের ১১ জুন নগরীর কুসুমবাগ, কাইচ্যাঘোনা, সেনানিবাসের লেডিস ক্লাব সংলগ্ন লেবুবাগান, বায়েজিদ বোস্তামী, লালখান বাজারের মতিঝর্ণা পাহাপড়সহ সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে মারা যায় শিশু-নারী ও বৃদ্ধসহ সব বয়সের ১২৭ জন।

পাহাড় ধসে ২০০৮ সালে মারা যায় ১২ জন। ২০১১ সালে একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৭ জন, ২০১২ সালে মারা যায় ২৩ জন। এভাবে প্রতিবছরই পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হচ্ছে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

১৪ জুন চট্টগ্রাম পাহাড় বসতি উচ্ছেদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর