৫০টি দৃষ্টিনন্দন মসজিদের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
১০ জুন ২০২১ ১১:৪২
ঢাকা: বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের অংশ হিসাবে প্রথম ধাপে ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে এ মসজিদগুলো নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বর্তমান সরকার।
মুজিববর্ষেই ১৭০টি মসজিদের উদ্বোধন করা হবে। যার অংশ হিসাবে প্রথম ধাপে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হলো।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সকল মসজিদের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়ন প্রান্তে অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এছাড়াও স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম।
গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। পরে প্রধানমন্ত্রী তিনটি জেলার তিন উপজেলায় যুক্ত হয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এই সকল মসজিদ নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার ধারাবাহিকতায় ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন করতে অনুমোদন দেওয়া হয়। মসজিদগুলো সরকারের নিজেস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে।
পদ্মা সেতুর পর নিজস্ব অর্থায়নে ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণই সবচেয়ে বড় প্রকল্প। একসঙ্গে এতগুলো উন্নত মানের মসজিদ নির্মাণ বিশ্বের আর কোনো দেশে হয়নি। এসব মসজিদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যথাযথ পর্দা মেনে নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রতিবন্ধীদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। লাইব্রেরি, গবেষণা, প্রশিক্ষণ, দাওয়াতি কার্যক্রমসহ বহুমুখী কাজের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে এসব মসজিদ, যা মফস্বল থেকে ঢাকা পর্যন্ত ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের একটি চেইন হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের অপেক্ষায় দৃষ্টিনন্দন ৫০ মসজিদ
এসব স্থাপনা তৈরি হচ্ছে ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (প্রথম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি খরচে বাস্তবায়ন করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মুশফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই ইসলামিক ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যার উদ্যোগে মডেল মসজিদ স্থাপনের কাজ ইতিহাসে অনন্য নজির হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসন আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। সব মডেল মসজিদ চালু হলে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর ইতিবাচক প্রভাব সারা দেশে পড়বে বলে আশা করি।
প্রথমধাপে উদ্বোধন করা হলো- ঢাকার সাভার, ফরিদপুরের মধুখালি, কাঁথা, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ী সদর, শরীয়তপুর সদর, গোসাইরহাট, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর, কাহালু, নওগাঁর কাপাকের, পোরশা, পাবনার চাটমোহর, সিরাজগঞ্জ সদর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, পবা, দিনাজপুরের খানসামা, বিরল, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ, রংপুর সদর, পীরগঞ্জ সদর, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিদপুর, জামালপুরের ইসলামপুর সদর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও, তারাকান্দা, ভোলা সদর, ঝালকাঠির রাজাপুর, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, নবীনগর, চা্ঁদপুরের কচুয়া, চট্টগ্রাম জেলা সদর, লোহাগড়া, মিরসরাই, স্বন্দীপ, কুমিল্লার দাউদকান্দি, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, খুলনা জেলা সদর, চুয়াডাঙা জেলা সদর, কুষ্টিয়া জেলা সদর এবং সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নির্মিত মসজিদ।
সারাবাংলা/এনআর