হাতিয়ায় ইউপি সদস্য খুন: গ্রেফতার ২
১১ জুন ২০২১ ১৭:৫০
নোয়াখালী: জেলার হাতিয়ায় ইউপি সদস্য রবিন্দ্র চন্দ্র দাসকে (৪২) গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুই ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীসহ ৬৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার সূত্র ধরে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দিবাগত রাতে আটক বর্তমান ইউপি সদস্যসহ দুইজনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মৃতের ছেলে বিটেল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুমন চন্দ্র দাস (৪০)। সে একই এলাকার মৃত নরত্তোম দাসের ছেলে। এছাড়াও, চরঈশ্বর ইউনিয়নের গামছা খালি গ্রামের আনাজল হকের ছেলে আমজাদ (৩৪)। তার বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় অগ্নিসংযোগসহ সাতটি মামলা রয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য রবীন্দ্রকে হত্যার ঘটনায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০জনকে আসামী করে নিহতের ছেলে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে চরঈশ্বর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আশ্রাফুল হক (২৮) ও মামলায় ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে তার কাকা চরঈশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুল হালীম আজাদকে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এবং পূর্ব শক্রতার জের ধরে গত বুধবার (৯ জুন) দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের নন্দ রোডে ইউপি সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি রবিন্দ্র চন্দ্র দাসকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। সে একই এলাকার তালুকদার গ্রামের সতিশ মহাজনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য রবিন্দ্র চরঈশ্বর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য। আসন্ন ইউপি নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। আগামী (২১ জুন) ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তিনি স্থানীয় বাংলাবাজারে মাছের ব্যবসা করতেন। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আল আমিনসহ মোটরসাইকেল যোগে হাতিয়া পৌরসভার ওছখালী এলাকার মাস্টার পাড়ায় তার বাসায় যাচ্ছিলেন।
যাত্রা পথে তাদের মোটরসাইকেলটি চরঈশ্বর প্রধান সড়কের খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন নন্দ রোডে পৌঁছলে একদল দূর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য কর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে তাদের গতিরোধ করে। এসময় মোটরসাইকেলের পিছনে থাকা আল আমিন দৌঁড়ে পালিয়ে গেলেও হামলাকারীদের হাতে আটকা পড়ে রবিন্দ্র। হামলাকারীরা প্রথমে রবিন্দ্রকে গুলি ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং তার হাতের কব্জি ও পায়ের রগ কেটে ফেলে যায়। পরে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবীন্দ্রকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত তিনটায় তার মৃত্যু হয়।
সারাবাংলা/একেএম