সাতক্ষীরা: লকডাউনের মধ্যেও সাতক্ষীরায় কমছে না করোনা সংক্রমণ। দিনে দিনে চিকিৎসক সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে হাসপাতালগুলোতে। গত ২৪ ঘন্টায় ২১১টি নমুনা পরীক্ষায় ১১১ জন করোনা সনাক্ত হয়েছেন। শতকরা হারে যা ৫৩ শতাংশ। এর আগের দিন সনাক্তের হার ছিল ৫০ শতাংশ।
জানা গেছে, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় দুইজন করোনা আক্রান্ত হয়ে এবং ৫ জন উপসর্গে মারা গেছেন। করোনায় এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ৫০ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৪৪ জন। এদিকে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৫৬ জন। জেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রয়েছেন ৬৪৭ জন। দুই সরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৯ জন। শয্যা সংকট না থাকলেও জনবল সংকট রয়েছে ব্যাপক। সীমিত জনবলে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।
সামেক হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার অপর্ণা রাণী পাল জানান, জেলায় করোনা রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্ত সীমিত জনবলে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। ১৬৫ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও আছে ১৫০ জন। বর্তমানে ডিউটি করছেন ৯৫ জন। তাদের মধ্যে নয়জন করোনা পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অচিরেই নার্স নিয়োগ না দিলে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খুদা বলেন, ৫৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৩১ জন। তার মধ্যে অনেকেই অসুস্থ।
সাতক্ষীরায় প্রথম দফা লকডাউনের মেয়াদ শুক্রবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। এ মেয়াদ আরও ৭ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা প্রতিরোধ ভার্চুয়াল বৈঠকে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়। একইসাথে আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়া উপজেলায় ২১টি ইউপি নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে করোনার উর্ধমুখী গতি নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের শেষ দিনে যশোর ও খুলনা সড়কের সঙ্গে সাতক্ষীরা শহর ও শহরতলীর সংযোগ সড়কগুলোর মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে। বাঁশ ও চেয়ার টেবিল ফেলে যানবাহন ও বিনাকারণে চলাচলে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছেন। তবে সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত পুলিশি তৎপরতা না থাকায় ব্যাপক জনসমাগম হচ্ছে শহরতলী ও গ্রামগঞ্জের হাটবাজারগুলোতে।