করোনাভাইরাস: ৬ সপ্তাহ পরে সংক্রমণ ১২ শতাংশের উপরে
১৩ জুন ২০২১ ১৩:৪০
ঢাকা: ৮ মার্চ ২০২০। নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে দেশে। এরপর গুনে গুনে ৬৬টি সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার কমে আসলেও মার্চ মাস থেকে এই হার বাড়তে থাকে। ৫৯তম সপ্তাহ (১৮ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের উপরেই থাকে। পরবর্তী সময়ে এটি কমে আসতে থাকলেও ৬৬ তম সপ্তাহে দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার আবার ছাড়িয়ে গেছে ১২ শতাংশের বেশি।
শুধু তাই নয়, মে মাসে কিছুটা কমে এলেও দেশে ৬৫ ও ৬৬ তম সপ্তাহে সংক্রমণ শনাক্তের হার থাকে ১০ শতাংশের উপরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি উদ্বেগজনক। এখনই যদি কার্যকর পদক্ষে না নেওয়া হয় তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে যেতে পারে। একদিকে বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি ও ভ্যাকসিন কার্যক্রমে ভাটা ও অন্যদিকে দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে বাড়ছে সংক্রমণ শনাক্ত ও মৃত্যুর হার। সবকিছু মিলিয়ে যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে রাজধানীতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। আর তখন এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাতেও।
শনিবার (১২ জুন) দেশে ৬৬ সপ্তাহ পূরণ হয় প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের। সেদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিং থেকে জানানো হয়, ৬৬ সপ্তাহ শেষে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৬ জন শনাক্ত হয়েছেন। আর কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ হাজার ৭১ জন। সবশেষ শনিবারের তথ্য অনুযায়ী সংক্রমণ শনাক্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৬৩৭ জন, মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আরও ৩৯ জন।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের সাপ্তাহিক পর্যালোচনা
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শুরুর দিকে এই ভাইরাসের সংক্রমণের গতি ছিল একেবারেই ধীর। যত সময় পার হয়েছে, ততই বেড়েছে সংক্রমণের গতি। ৮ মার্চ যে প্রথম ৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়, ওই দিন থেকে হিসাব করলে প্রথম সপ্তাহে (৮ মার্চ থেকে ১৪ মার্চ) আর কারও শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়নি।
এরপর দ্বিতীয় সপ্তাহের ঠিক প্রথম দিন, ১৫ মার্চ গিয়ে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন আরও দু’জন। ওই সপ্তাহে (১৫ মার্চ থেকে ২১ মার্চ) মোট ২১ জনের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তৃতীয় সপ্তাহে (২২ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ) এই সংখ্যা ছিল আরও তিন জন বেশি— ২৪ জন।
চতুর্থ সপ্তাহে (২৯ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল) সংক্রমণ একটু কমেও যায়। সে সপ্তাহে ২২ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন নমুনা পরীক্ষায়। চার সপ্তাহ মিলিয়ে সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৭০টি।
সপ্তাহভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চতুর্থ সপ্তাহের তুলনায় পঞ্চম সপ্তাহে (৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল) সংক্রমণের গতি হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। চতুর্থ সপ্তাহে যেখানে ২২ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন, সেখানে পঞ্চম সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ৪১২! এরপর প্রতিটি সপ্তাহেই এমন উল্লম্ফনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। যেমন ষষ্ঠ সপ্তাহে (১২ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) সংক্রমণ শনাক্ত এক লাফে পেরিয়ে যায় দেড় হাজার— সংখ্যাটি ছিল এক হাজার ৬৬২।
একই ধারাবাহিকতায় সপ্তম সপ্তাহে (১৯ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল) সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২ হাজার ৮৫৪টি, অষ্টম সপ্তাহে (২৬ এপ্রিল থেকে ২ মে) ৩ হাজার ৭৯২ ও নবম সপ্তাহে (৩ মে থেকে ৯ মে) এই সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯৮০। দশম সপ্তাহে (১০ মে থেকে ১৬ মে) ৭ হাজার ২২৫টি কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয় সারাদেশে।
১২ তম সপ্তাহ (২৪ মে থেকে ৩০ মে) থেকে দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার ছাড়িয়ে যায় ২০ শতাংশ। ১৯ তম সপ্তাহে (১২ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই) দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের হার দেখা যায় সাপ্তাহিক তথ্য বিবেচনায়। এই সপ্তাহে দেশে ২৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
২৫ তম সপ্তাহ (২৩ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট) থেকে দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হারে নিম্নগতি দেখা যায়। ৪১তম সপ্তাহে (১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর) দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার ১০ এর নিচে নেমে আসে।
৫৫ তম সপ্তাহে (২১ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ) দেশে আবার সংক্রমণ শনাক্তের হার ১০ শতাংশের উপরে ওঠে। ৫৭ তম সপ্তাহে (৪ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল) দেশে আবার সংক্রমণ শনাক্তের হার ২২ শতাংশের উপরে ওঠে, তবে ৬১ তম সপ্তাহে (২ মে থেকে ৮ মে) দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার কমে এলেও ৬৫তম সপ্তাহে এটি আবার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ৬৬ তম সপ্তাহে তারই ধারাবাহিকতায় বাড়তে থাকে।
শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়া উদ্বেগজনক
অতীত পরিসংখ্যান বলছে দেশে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সামনের সপ্তাহগুলোতে সংক্রমণ শনাক্তের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বাড়তে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে দেশে ২০২১ সালের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই সংক্রমণ শনাক্তের হার বাড়তে থাকে দ্রুতগতিতে। পরে এপ্রিল মাসে দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণ, মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেখা যায়। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়েও তারা সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বিভিন্ন কারণেই সংক্রমণ বাড়তে পারে। সংক্রমণ বেশি তখনই হবে, যখন বেশি বেশি মানুষ এই ভাইরাসের সামনে ‘এক্সপোজড’ হবেন। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সংক্রমণের হার বাড়ছিল। ধীরে ধীরে তা অন্য এলাকাতেও ছড়িয়েছে। আর তাই সংক্রমণ শনাক্তের হার বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ বাড়বেই। আর তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিতে হবে। সংক্রমণের উৎস ও উৎপত্তিস্থল বিশ্লেষণ করে তারপর সেই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
সরকারের আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডা. মোশতাক বলেন, ‘সরকার দেশব্যাপী কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছে, যা সবাই অনুসরণ করেছেন— এটি বলা যায় না। এর মধ্যে যেসব এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে সেসব স্থানে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে । তবে এক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি সবাইকে মাস্ক পরার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়েও সবাইকে বোঝাতে হবে। এটা আইন প্রয়োগ করে সম্ভব হবে না। কারণ আইন সেখানেই প্রয়োগ করা যায় যেখানে সবাই সেটা মানে। তাই কঠোর হয়ে নয়, মানুষকে বোঝাতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মানা বিষয়ে। একই সঙ্গে যেসব অস্বচ্ছল পরিবারের সদস্যদের মাঝে সংক্রমণ শনাক্ত হবে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নিতে হবে।’
জানতে চাইলে কোভিড-১৯ বিষয়ক ট্রিটমেন্ট প্রটোকল কমিটির সদস্য সচিব ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সবার আগে বিবেচনায় রাখতে হবে যে বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এখানে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে কোনো প্রকারের ঢিলেঢাআ ভাব বিপদ বয়ে আনতে পারে। আমরা জানি দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণ শনাক্তের হার বাড়ছিল। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য এলাকাতেও। সম্প্রতি ঢাকাতেও কিন্তু ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়ছে। আর এমন অবস্থায় আমাদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সংক্রমণ বেড়ে গেলে তখন তা নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের মতন ঘনবসতি পূর্ণ দেশে কঠিন হয়ে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে শুধুমাত্র ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বলে খ্যাত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই না বরং দক্ষিণ আফ্রিকা ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টও কিন্তু ছড়িয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। তবে একটা বিষয় হলো ভ্যারিয়েন্ট যাই হোক না কেনো চিকিৎসাপদ্ধতি কিন্তু একই। আর তাই চেষ্টা করতে হবে সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। এজন্য আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্ক পরতেই হবে। প্রয়োজনে দেশে যেসব অঞ্চলে সংক্রমণ বাড়ছে সেখানে বিধিনিষেধ আরও কঠোরভাবে আরোপ করতে হবে।’
দেশে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় হলো মানুষের মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করা। নইলে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি কমানো কঠিন। এখন হয়ত সংক্রমণ শনাক্তের হারে কিছুটা নিম্মমুখী ধারা দেখা যাচ্ছে; কিন্তু সেটাতে সন্তুষ্ট হওয়ার উপায় নেই। করোনাভাইরাসের সমস্যাটি এমন যে, প্রতিরোধ করেই একে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তা না পারলে পরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। এখনো যদি আমরা এই বার্তাটি না বুঝি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলি, তাহলে আমাদের সামনে ভয়াবহ বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।’
সরকারের বিধিনিষেধ অব্যাহতভাবে জারি রাখার বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনার অভাব রয়েছে বলে মনে করে ডা. নজরুল। তিনি বলেন, ‘সরকার বিধিনিষেধের সময়কাল বাড়িয়েছে, বাড়াচ্ছে— এমন প্রচারণা শুনছি। কিন্তু এটা কেন ও কী কারণে দেওয়া হচ্ছে তা জনগণকে বোঝাতে হবে। আমার ধারণা, জনগণের কাছে এই ধারণাটি এখনো স্পষ্ট নয়। আর তাই সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করলেও অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলো মানা হচ্ছে না। জনগণের কাছে নির্দেশনা স্পষ্ট করতে হবে। তারা মানছে কি না, সেটি কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। যারা মানছে না, তারাও যেন মানতে বাধ্য হয়, এমন ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি সীমান্তের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে সংক্রমণ বাড়ছে। এটি কেন হচ্ছে? এর জন্য কিন্তু দায়ী অনেক কিছুই। বাণিজ্যিকভাবে ভারত থেকে অনেক ট্রাক আমাদের দেশে পণ্য নিয়ে আসে। সেগুলো আসার পর আমাদের দেশের শ্রমিকরা বিভিন্ন স্থানে সেই পণ্য পাঠানোর কাজ করে থাকে। সেখানে কিন্তু খুব একটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করে না তারা। এখন দেশে বিধিনিষেধ চলাকালে তো এগুলো বন্ধ রাখা হয়নি। কিন্তু বলা হচ্ছে, লকডাউন সারাদেশে। আদৌ কি তা? সবকিছু নিয়ে হেলাফেলা করতে করতে আজ পর্যন্ত আমরা একটা কাঠামোই দাঁড় করাতে পারিনি। আর এগুলো হয়েছে সমন্বয়হীনতার কারণেই।’
তবে ডা. নজরুলও বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়টি। তিনি বলেন, ‘সবাই যদি মাস্ক পরে, সবাই যদি অন্য স্বাস্থ্যবিধিগুলো ঠিকমতো মেনে চলে, তাহলেই কিন্তু করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব ৯০ শতাংশের বেশি। ফলে মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে, বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে, না ধুয়ে চোখে-নাকে-মুখে হাত দেওয়া যাবে না, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। সবাই এগুলো অনুসরণ করলে পরিস্থিতি এমনিতেই নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
সরকারের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশে বিভিন্ন রকমের ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মানুষের অবাধ চলাচলের কারণে বিভিন্ন স্থানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে ভ্যারিয়েন্টের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানলে তো ভ্যারিয়েন্ট কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। আর তাই মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা আজকের এ অবস্থা তৈরি করেছে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুসরাত সুলতানা লিমাও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণেই জোর দিতে বলছেন সবাইকে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রধানতম করণীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। বিশেষ করে মাস্ক পরার অভ্যাসটা চালু করা। কেউ মাস্ক পরে যদি বাইরে যান, তিনি হাঁচি-কাশি দিলেও কিন্তু মাস্ক তার কাছ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কমিয়ে দেবে। সেইসঙ্গে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করলে তার কাছ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা একেবারেই কমে যাবে। ফলে স্বাস্থ্যবিধিটা সবাইকে মানতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
সারাবাংলা/এসবি/একে