Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গার্ড অব অনারে নারী ইউএনও’র বিকল্প খোঁজার প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুন ২০২১ ২১:২৫

ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধাদের মরদেহে গার্ড অব অনার দিতে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরিবর্তে পুরুষ কর্মকর্তা নিয়োজিত করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রস্তাবকে সংবিধানবিরোধী বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নারী সেল। এর মাধ্যমে সংসদীয় কমিটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি অবস্থান নিয়ে উল্লেখ করে নারী সেল প্রস্তাবকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ জুন) এক বিবৃতিতে নারী সেলের নেতারা এ কথা বলেন। তারা বলেন, রোববার (১৩ জুন) সংসদীয় কমিটি যে প্রস্তাব করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করছে নারী সেল। যারা এ প্রস্তাব করেছেন, তারা বাংলাদেশের সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি অবস্থান নিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা কোন লিঙ্গের হবে, সেটি কোনো বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না। তিনি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তার দায়িত্ব পালন করেন। এ ধরনের প্রস্তাব এক ধরনের ধৃষ্টতা। কোনোভাবেই বাংলাদেশের নারী সমাজ ও আপামর জনগণ এ প্রস্তাব মানবে না।

আরও পড়ুন- ‘গার্ড অব অনারে’ নারী ইউএনও’র বিকল্প খোঁজার সুপারিশ

নারী সেলের নেতারা বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই, অতীতেও হেফাজতের দাবিতে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার ‘নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১০’ থেকে সরে এসেছে। সরকার পাঠ্যপুস্তকে পরির্বতনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনায় নারীকে পশ্চাৎপদ করার নানা মৌলবাদী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ের অবতারণা করে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি হাজার হাজার নারী মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের নারী আন্দোলনকে অবমাননা করেছে।

সিপিবি নারী সেল অবিলম্বে সংসদীয় কমিটির এ প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং যারা এ প্রস্তাব করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সংবিধাান লঙ্ঘনের অপরাধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বা সরকার যদি এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের ন্যূনতম আগ্রহ দেখায়, তাহলে বাংলাদেশের প্রগতিশীল নারী সমাজ আপামর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, রোববার (১৩ জুন) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সুপারিশ করা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানের আয়োজন দিনের বেলায় করতে এবং যেসব জায়গায় নারী ইউএনও রয়েছেন সেখানে, বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকার ঘোষিত নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা প্রশাসন। ডিসি বা ইউএনও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে থাকেন। কফিনে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

যেখানে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার দেশে-বিদেশে প্রশংসিত, সেখানে এমন একটি সুপারিশ কতটুকু গ্রহণযোগ্য?— এমন প্রশ্নের উত্তরে যুক্তি উপস্থাপন করে শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, নারীরা জানাজায় থাকতে পারেন না। সেক্ষেত্রে নারী ইউএনও গার্ড অব অনার দিতে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

গার্ড অব অনার নারী ইউএনও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর