জাতিসংঘে ‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’ উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১৫ জুন ২০২১ ১৬:১৭
ঢাকা: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে লাউঞ্জটি স্থাপন করা হয়।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) ‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’ উদ্বোধন করেন নিউ ইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘে অবস্থিত বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ সময় ড. আবদুল মোমেন বলেন, লাউঞ্জটিতে বিভিন্ন বই, ছবি, প্রামাণ্য চিত্র ও গ্রাফিক্যাল ডিসপ্লের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। বহপাক্ষিকতাবাদ, বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি জাতির পিতার যে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস ছিল, বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জের এই সংগ্রহ যেন তাই ফুটিয়ে তুলেছে। লাউঞ্জটিতে জাতির পিতার ওপর আরও বই ও প্রদর্শণী সামগ্রী প্রদান করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘গতবছর লাউঞ্জটির স্থাপনের কাজ শেষ হলেও কোভিড-১৯’র কারণে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সম্ভব হয়নি। এটি অত্যন্ত আনন্দের যে অবশেষে আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লাউঞ্জটি উদ্বোধনের জন্য পেয়েছি। আমার বিশ্বাস, লাউঞ্জটি মিশনে আগত সুধিজনদের বিশ্ব শান্তির প্রতি জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।’
মিশনে আসা জাতিসংঘ ও সদস্য রাষ্ট্রসমূহের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবর্গের বৈঠকের জন্য লাউঞ্জটি ব্যবহৃত হবে। এর ফলে তারা জাতির পিতা জীবনাদর্শ সমন্ধে সম্যক ধারণা লাভের সুযোগ পাবেন।
জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। সেই থেকে বাংলাদেশ বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে ইউএনডিপি/ইউএনএফপিএ/ইউএনওপিএস’র নির্বাহী বোর্ডের সহ-সভাপতি, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এজেন্ডাসমূহ শেনীবিন্যাসের ক্ষেত্রে গঠিত আন্তরাষ্ট্রীয় কনসালটেশনের ফ্যাসিলেটেটর এবং পঞ্চম জাতিসংঘ এলডিসি কনফারেন্সের প্রস্তুতি কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ।
এদিকে সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে জাতিসংঘের অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে’র সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন। আলোচনাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহণে বাংলাদেশ বিমানকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সহায়তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য জনাব খারে’কে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল খারে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাঠ পর্যায়ে জাতিসংঘের পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত কৌশল বাস্তবায়নে নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।
এছাড়াও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নারী শান্তিরক্ষীদের দ্বারা কৌশলগত যোগাযোগ এগিয়ে নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে প্রস্তাব দেন তা স্বাগত জানান অতুল খারে। অতুল খারেকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মানুষকে জানানোর অনুরোধ করেন বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদান উপলক্ষে সরকারি সফরে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তিনি এলডিসি বিষয়ক একটি যৌথ থিমেটিক সভায় অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব, সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ জাতিসংঘের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সদরদফতর ও অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য ‘মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি: সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের অবস্থা’ ও ‘স্বল্পোন্নত দেশসমূহের টেকসই উত্তরণ এবং পুনরায় ফিরে আসা রোধে সক্ষমতা বিনির্মাণ’ শীর্ষক দুটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সারাবাংলা/জেআইএল/এনএস