ঢাকা: বেলজিয়ামের জনসন অ্যান্ড জনসন (জ্যানসেন ক্লেগ ইন্টারন্যাশনাল) উৎপাদিত এক ডোজের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ‘জ্যানসেন’ জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ষষ্ঠ ভ্যাকসিন হিসেবে এটি প্রয়োগের অনুমতি পেল দেশে। এর আগে অনুমোদন দেওয়া পাঁচটি ভ্যাকসিনের প্রত্যেকটিরই দুইটি করে ডোজ দিতে হয়।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমানের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর জানায়, জ্যানসেন ভ্যাকসিনের জরুরি প্রয়োগের জন্য ‘ইমার্জেন্সি ইউজ অথোরাইজেশনে’র আবেদন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ভ্যাকসিনটির ডোসিয়ার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পার্ট, সিএমসি পার্ট ও রেগুলেটরি স্ট্যাটাস) মূল্যায়ন করেছে। এরপর সংশ্লিষ্ট কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এটি প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর আরও জানায়, বাংলাদেশে ভ্যাকসিনটির লোকাল এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যাটারনাল, নিওন্যাটাল, চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলোসেন্ট হেলথ (এমএনসি অ্যান্ড এএইচ) ইউনিট। ভ্যাকসিনটি গত ১২ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ ও ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সির ইমার্জেন্সি ইউজ অথোরাইজেশনও পেয়েছে জ্যানসেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনটি ১৮ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য। ভ্যাকসিনটি বাংলাদেশ সরকারের ডিপ্লয়মেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী নির্ধারিত বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে প্রয়োগ করা হবে। ভ্যাকসিনটি এক ডোজের। ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এটি সংরক্ষণ করতে হয়।
এদিকে, দেশে ষষ্ঠ ও একডোজের প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে দেশে জ্যানসেন প্রয়োগের অনুমতি মিলল। গত ৭ জানুয়ারি সবার আগে দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এরপর গত ২৭ এপ্রিল রাশিয়ার জেনেরিয়াম জয়েন্ট স্টক কোম্পানি উদ্ভাবিত স্পুটনিক-ভি, ২৯ এপ্রিল বেইজিং ইনস্টিটিউব অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস উদ্ভাবিত সিনোফার্ম ভ্যাকসিন, ২৭ মে ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন এবং সবশেষ ৬ জুন চীনের সিনোভ্যাক লাইফ সায়েন্সেস উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিন করোনাভ্যাক দেশে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিলে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।
এর মধ্যে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেশে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এই ভ্যাকসিনের এক কোটি ডোজ প্রয়োগ শেষ হয়েছে। চীনের সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের ৫ লাখ ডোজ উপহার দিয়েছে চীন সরকার, ৬ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে পাঠানোর কথা রয়েছে চীনের। এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগও শুরু হয়েছে। সবশেষ সোমবার রাতে দেশে এসেছে ফাইজারের ১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন।
আরও পড়ুন-
সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন জনসাধারণকে প্রয়োগের অনুমতি চীনের
ব্রাজিলের এক শহরে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে এনেছে সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন