চট্টগ্রামে আনসার আল ইসলামের আরেক সংগঠক গ্রেফতার
১৫ জুন ২০২১ ২১:৫৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আরেক সংগঠককে গ্রেফতার করেছে নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের কর্মকর্তারা। গ্রেফতার সংগঠক এর আগে গ্রেফতার সিরিয়া ফেরত যোদ্ধা ও আনসার আল ইসলামের ‘আইটি বিশেষজ্ঞ’ সাখাওয়াত আলী লালুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে নগরীর ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গ্রেফতার মোহাম্মদ শামীমুর রহমান প্রকাশ শামীম হুজুর (৪৩) নগরীর ফিরোজ শাহ কলোনি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব এবং স্থানীয় একটি কওমি মাদরাসার শিক্ষক।
সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিএমপির উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাখাওয়াতকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শামীম নামে একজনকে গ্রেফতার করেছি। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিনি জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।’
কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেফতার শামীম হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। তবে তারা বিষয়টি যাচাইবাছাই করে দেখছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শামীম ২০ বছর ধরে ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকার বড় মাদরাসা হিসেবে পরিচিত কওমি মাদরাসাটিতে শিক্ষকতা করে আসছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তার বাসায় আনসার আল ইসলামের সাংগঠনিক বৈঠক হত। এসব বৈঠকে থাকতেন সাখাওয়াতও। সিরিয়ায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধ শেষে দেশে ফেরার পর সাখাওয়াতের সঙ্গে আবারও শামীমের বৈঠক হয় বাসায়।
এর আগে, গত শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে নগরীর দক্ষিণ খুলশীতে আহলে হাদিসপন্থীদের একটি মসজিদের সামনে থেকে সাখাওয়াত আলী লালুকে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের কর্মকর্তারা গ্রেফতার করেন। ৪০ বছর বয়সী সাখাওয়াত নগরীর খুলশী থানার এম এম আলী রোডের বাসিন্দা শেখ মো. শমসের আলীর ছেলে। শমসের নগরীর লালখান বাজার এলাকার অভিজাত লন্ড্রি ‘ওয়াশো ড্রাই ক্লিনার্সের’ মালিক।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইয়েন্সে উচ্চতর ডিগ্রি সম্পন্ন করা সাখাওয়াত মূলত ২০১২ সালের দিকে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। আনসার আল ইসলামের সামরিক কমান্ডার বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়ার ভাবশিষ্য ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে তুরস্কে চলে যান সাখাওয়াত। কয়েকদিন তুরস্কে অবস্থানের পর অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ায় চলে যান। সেখানে হায়াত তাহরীর আরশাম সংগঠনের মাধ্যমে ছয়মাসের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন। এরপর সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে বিদ্রোহীদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেন। ২০১৭ সালের ২২ মার্চ সাখাওয়াত বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
গ্রেফতারের পর সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে নগরীর খুলশী থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তাকে দুই দফায় ছয়দিনের রিমান্ডে পেয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ।
সারাবাংলা/আরডি/এমও