‘ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে জিয়া হাজার হাজার বৃক্ষও ধ্বংস করেছেন’

ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করার জন্য কেবল সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার অফিসার ও জওয়ানকেই হত্যা করেননি, ঢাকা শহরের হাজার হাজার গাছও কেটে ফেলেছেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির  উদ্যোগে চার মাসব্যাপী গাছের চারা রোপণ ও পরিচর্যা কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় মন্ত্রী এ কথা বলেন। বন ও পরিবেশ উপকমিটির অন্যতম উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে দেশে একটি অদ্ভুত ধরনের তন্ত্র চালু করেছিলেন, সেটা হচ্ছে কারফিউতন্ত্র। যাদের বয়স পঞ্চাশের ওপরে, তাদের মনে থাকবে— জিয়াউর রহমানের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম শহরে বছরের পর বছর রাতের বেলা কারফিউ ছিল। তিনি ঢাকা শহরে রাস্তার দুই ধারের গাছপালা সব কেটে ফেলেছিলেন। জিয়াকে কেউ একজন বলেছিল যে গাছের ফাঁক থেকে আপনাকে গুলি করতে পারে। এ কারণে ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে সব গাছ কেটে ফেললেন।’

তিনি বলেন, আবার আমরা দেখলাম, হেফাজতের আন্দোলনের সময় বিএনপি-জামায়াত মিলে ঢাকা শহরের সব গাছ কেটে ফেলেছে। পরিবেশ-প্রকৃতি নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের বেশিরভাগকে তখন চুপ থাকতে দেখেছি, যেটি অনভিপ্রেত।

‘বিএনপি-জামাতের ক্ষমতার সময় দেশে বনভূমির পরিমাণ ৮ শতাংশে নেমে এসেছিল। আজ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে গত সাড়ে ১২ বছরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত জমির পরিমাণ অনেক বেড়েছে, একইসঙ্গে বনভূমির পরিমাণও ১২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে,’— বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃক্ষরোপণ-বৃক্ষসৃজনকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছেন। আমরা একটি করে বনজ, ভেষজ ও ঔষধি— তিন ধরনের গাছ লাগিয়ে এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করব।’

আওয়ামী লীগের প্রথম বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং পরে বন ও পরিবেশমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালনকারী পরিবেশ গবেষক ড. হাছান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ঘোড়দৌড়ের এই ময়দানে বৃক্ষশোভিত উদ্যান গড়ে তুলেছিলেন। তারপর এটিকে আরও গাছপালায় সুশোভিত করেছেন আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে লোকালয়ে রাস্তার ধারে শুধু বন সৃজন করা হয়েছে তা নয়, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে নিঃস্ব মানুষেরা সেই গাছের মালিকানা পেয়েছেন এবং নির্দিষ্ট সময়ে সেই গাছ বিক্রি করে অনেকে ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকাও পেয়েছেন।

কোনো একটি গোষ্ঠী এই পুতুল সরকার পরিচালনা করছে— বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকার জনগণের শক্তিতে বলীয়ান একটি শক্তিশালী সরকার। সে কারণে জনগণ পরপর তিনবার রায় দিয়ে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। গুরুজনকে সম্মান করার শিক্ষা আমার পরিবার এবং আমার নেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। সেজন্য বয়সে জ্যেষ্ঠ বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান রেখে বলছি— তার ডাক নাম ‘পুতুল’। এজন্যই হয়তো ‘পুতুল’ কথাটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবে মাথায় ঘুরপাক খায়।”

সভা শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা কালীমন্দির সংলগ্ন অংশে ফলজ, বনজ ও ঔষধি— এই তিন ধরনের একটি করে গাছের চারা রোপণ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

জিয়াউর রহমান ড. হাছান মাহমুদ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বৃক্ষরোপণ