Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নারী শুধু ঘরে নয় রাষ্ট্রীয়ভাবেও নির্যাতিত

সারাবাংলা ডেস্ক
১৬ জুন ২০২১ ২৩:৫০

ঢাকা: সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যু পরবর্তী গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিকল্প নির্ধারণের সুপারিশকে অসাংবিধানিক ও অগ্রহনযোগ্য আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।

বুধবার (১৬ জুন) জাতীয় জাদুঘরের অনুষ্ঠিত মানববন্ধন পরবর্তী সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ব্ক্তব্য রাখেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) রাখী জামান, উই ক্যান’র পরিচালক সুরাইয়া পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ’র সেলিনা পারভীন, আইইডি’র সঞ্চিতা তালুকদার ও স্টেপস টুওয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট’র চন্দন লাহিড়ী এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধন থেকে বক্তারা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে উন্নয়নের মহাসড়কে দাড়িয়ে এই ধরনর লজ্জাস্কর বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। করোনাকালে নারী শুধু ঘরে নয় রাষ্ট্রীয়ভাবেও নির্যাতিত।

নারী অধিকার কর্মীরা বলেন, অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নারী তার নিজ যোগ্যতায় প্রশাসনে জায়গা করে নিয়েছে। নারীর অর্জনকে নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। নারী কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিনিধি । এই বক্তব্য লৈঙ্গিক সমতার নীতি এবং সংবিধানের ১৭(১)-১১) অনুচ্ছেদ এবং ২৭, ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই রাষ্ট্র ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার। সবজায়গায় এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিরা মুখোশধারী হিসেবে আছে। এদের জবাবাদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিকল্প নির্ধারণের সুপারিশ করে প্রশাসনকে নারীর ক্ষমতায়নে সহায়তা করার পরিবর্তে নারীকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে।

তিনি বলেন, নারী ইউনএনও নামে কোনো পদ নেই। একই প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে নারী পুরুষ উভয়ই রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার অধিকার ও যোগ্যতা অর্জন করে। সংবিধানের মাধ্যমে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ভোগ করার কথা বলা হয়েছে। এই অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। এ সময় তিনি গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীরবিকল্প ব্যাক্তি নির্ধারণের সুপারিশ করে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন তাদের শাস্তির দাবি জানান।

তিনি আরও বলেন, গার্ড অব অনার একটি রাষ্ট্রীয় সম্মান। এখানে ধর্মান্ধতার দোহাই দিয়ে নারীদের সরিয়ে রাখার সুপারিশ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি, তিনি সাংসদদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, সংবিধানবিরোধী সুপারিশ প্রত্যাহার করে নারী ক্ষমতায়নের পথ সুগম করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে, ওই প্রতিবাদী কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত আন্দোলন সম্পাদক রেখা চৌধুরী।

সারাবাংলা/একেএম

আইন ও সালিশ কেন্দ্র ইউএনও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর