Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গৃহহীনদের টাকা ফেরত দিলেন শাল্লা ইউএনও

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৭ জুন ২০২১ ০৯:৪৯

সুনামগঞ্জ: মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণের সময় গৃহহীনদের কাছে থেকে পরিবহন খরচ বাবদ ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদীর হোসেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই টাকা ফেরত দেওয়ার পর তার দাবি, পরিবহনের বরাদ্দ শুরুতে আসে নাই। এজন্য দিতে পারি নাই। টাকা পেয়ে প্রত্যেককেই চার হাজার টাকা করে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এই টাকা গত ৬ জুন গৃহহীনদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ১ হাজার ৪৩৫ গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর দেওয়া হয়। ঘর দেওয়ার সময়ই নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগও ওঠে। মেঝোতে ইট না দিয়ে বালু-সিমেন্টের মিশ্রণের মসলা দিয়ে ফ্লোর করে দেওয়া, নিম্নমানের ইট, বালু ও পাথর ব্যবহার, নির্মাণের মালামাল পরিবহনের টাকা গৃহহীনদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া, এমনকি মিস্ত্রির টাকাও গৃহহীনদের দিতে বাধ্য করাসহ নানাভাবে অসহায় মানুষজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

গত জানুয়ারিতে ঘর দেওয়ার পর ৪ ফেব্রুয়ারি তিনজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও ২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে শাল্লায় তদন্তে যান জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। একাধিক দলে ভাগ হয়ে নির্মাণাধীন গৃহহীনদের ঘরে ঘরে যান তারা। ২০ ফেব্রুয়ারি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণসহ ২৮ জন ম্যাজিস্ট্রেট ওখানকার নির্মাণাধীন প্রত্যেক ঘরে ঘরে যান। এরপর আরও দুই দফায় জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ ২৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট ওখানে দিনব্যাপী গিয়ে তদন্ত করেন। তদন্তকালেই গৃহনির্মাণের দায়িত্বে থাকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মামুনুর রহমানকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।

তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ইট সলিং করে মেঝে পাকা করার নির্দেশ দেন। পরিবহন খরচ এবং মিস্ত্রি খরচের টাকা দরিদ্র মানুষজন যারা নিজেরা দিয়েছে, ওই টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেন।

গৃহহীনদের কাছ থেকে এসব টাকা সংগ্রহ করেছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য এলাছ মিয়া। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি টাকা দেব কোথা থেকে। আমি হুকুম পালন করি। যেভাবে বলা হয়েছিল সেভাবে করেছিলাম। ইউএনও সাহেবসহ কর্মকর্তারা যেভাবে বলছেন সেভাবে কাজ করে দিচ্ছি। স্যারদের কথামতই কাজ করছি।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি যোগদানের পরই শাল্লায় গৃহনির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দরিদ্র মানুষজনের উপহারে একটি টাকার অনিয়মও সহ্য করা হবে না আমি শুরুতেই বলেছি।

তিনি বলেন, আমাদের চোখে নানাবিধ ত্রুটি বিচ্যুতি ধরা পড়েছে। আমরা সেগুলো সংশোধন করিয়েছি। এখনো সংশোধনের কাজ চলছে। শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রদানে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে ৭ জুন শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সারাবাংলা/এএম

টপ নিউজ সাতক্ষীরা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর