হ্যাঙ্গারের বাড়তি ভাড়ায় বিপাকে হেলিকপ্টার ব্যবসা
১৭ জুন ২০২১ ১২:২৭
ঢাকা: ১৯৯৯ সালে বাণিজ্যিকভাবে চালুর পর সিভিল এভিয়েশনের জায়গা ইজারা নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হ্যাঙ্গার স্থাপন করে কার্যক্রম চালাচ্ছিল হেলিকপ্টার কোম্পানিগুলো। এতে বছরে প্রতি স্কয়ার ফিটে ১০০ টাকা করে ভাড়া গুণতে হতো তাদের। এবার সিভিল এভিয়েশন কোম্পানি নিজেরাই হ্যাঙ্গার নির্মাণ করে ভাড়া দিতে চাচ্ছে। তাদের প্রস্তাবিত ভাড়ায় প্রতি স্কয়ার ফিটে মাসে ৮৫ টাকা করে দিতে হবে। সেই হিসেবে বাৎসরিক ১০০ টাকার ভাড়া গুণতে হবে ১০২০ টাকা। ‘অস্বাভাবিক’ এই ভাড়ার প্রস্তাবনায় বিপাকে পড়েছে হেলিকপ্টার কোম্পানিগুলো।
জানা গেছে, রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ চলছে। এজন্য জুলাইয়ের মধ্যে হেলিকপ্টার কোম্পানির নির্মাণ করা হ্যাঙ্গারসহ সব স্থাপনা সরানোর নিদের্শ দিয়েছে সিভিল এভিয়েশন। এরপর থেকে তাদের ভাড়া দেওয়া হ্যাঙ্গারেই চালাতে হবে হেলিকপ্টার সেবা।
জানা যায়, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা ও ত্রাণ তৎপরতাসহ জরুরি প্রয়োজনে পরিধি বেড়েছে হেলিকপ্টার সেবার। বর্তমানে ১০টি কোম্পানির ৩০টি হেলিকপ্টার ও আটটি উড়োজাহাজ সেবা দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে সিভিল এভিয়েশন থেকে জায়গা ইজারা নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হ্যাঙ্গার স্থাপন করে কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এ বিষয়ে বেক্সিমকো হেলিকপ্টারের নির্বাহী পরিচালক আশীষ রায় চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, যে ভাড়া ধরা হয়েছে সেটা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে এই সেবাখাত হুমকির মুখে আছে। সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমাদের জন্য তারা কী করবে, আর কী করবে না।
৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিভিল এভিয়েশনের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্স এখনো পূর্ণাঙ্গ নয় জানিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, নির্মিত হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে কোনো দরজা নেই। বড় হেলিকপ্টার চালু করলে কোনো এয়ারক্রাফট স্থির থাকতে পারবে না। এছাড়াও যেখানে হ্যাঙ্গার স্থাপন করা হয়েছে, সেটা রানওয়ের কাছে। এখান থেকে হেলিকপ্টার উড়তে গেলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সিভিল এভিয়েশনের বানানো হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে পানি ও বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা নেই। কমপ্লেক্স ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেই।
তবে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানের দাবি, ‘কোম্পানিগুলোর চাহিদা মোতাবেক হ্যাঙ্গার তৈরি করেছি। আমরা ভাড়ার বিষয়ে সহনীয় করতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা দেখছি কিভাবে এই সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন করা যায়। এখানে আমরা ব্যবসায়ের চিন্তা করছি না। আমরা ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে হ্যাঙ্গার বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। আর জুলাইয়ের মধ্যে তাদেরকে হ্যাঙ্গার ভেঙে সরিয়ে ফেলতে হবে। তবে বেশি ভাড়ার বিষয়ে আমরা সবার সাথে আলোচনা করে একটি সমাধানে এসেছি। আশা করি এতে কোনো সমস্যা হবে।’
তিনি বলেন, হ্যাঙ্গারগুলো সরিয়ে নিতে বলেছি, কারণ থার্ড টার্মিনালের কাজ হেলিকপ্টারের হ্যাঙ্গারের কারণে এতোদিন ঢিলেঢালাভাবে চলছিল। টার্মিনালের কাজ দ্রুতই এগিয়ে নিতে হবে। সেজন্য শাহজালালের পরিচালককে চিঠি দিয়েও জানানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এসজে/এএম