সংবিধানে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে: হারুনুর রশিদ
১৭ জুন ২০২১ ১৪:২৬
ঢাকা: সংবিধানে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি করেন।
হারুনুর রশিদ বলেন, সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলোর কি কোনো অস্তিত্ব আছে? রাষ্ট্রপতি নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে যেকোনো দণ্ডিত আসামিকে ক্ষমা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। মহাজোট সরকারের আমলে প্রায় ৪০-৫০ জন খুনের দণ্ডিত আসামিদের ক্ষমা করা হয়েছে। এটি বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। কিছুদিন আগে আল-জাজিরায় অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এতে গোটা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। সংবিধানের এই ত্রুটিগুলো সংশোধন হওয়া দরকার।
হারুনুর রশীদ বলেন, সংবিধানে বলা হচ্ছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার কথা। আজকে আমরা সেই জায়গায় কি আছি? আজকে এগুলোর কোনটার চর্চা আছে? বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ মুসলমান, ৯০ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসারী, আমাদের ধর্ম কোরআন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি কোরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কোনো স্থান নাই। এটি সংবিধানের বড় অসঙ্গতি।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক কারণে মাত্র দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তাকে চিকিৎসার সুযোগটা দিচ্ছেন না। আর বাংলাদেশের দণ্ডিত জঘন্যতম আসামি যারা, তাদেরকে মাফ করে দিচ্ছেন। এটি হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদের সরকারি দল ও বিরোধী দল সবাই মিলে একাকার। আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা বাইরে বলছেন বিরোধী দলের কোনো মূল্য নাই। সরকারি দলের কোনো মূল্য আছে? সরকারি দলের মন্ত্রীরা বারবারই বলছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ অপরিহার্য নয়। এভাবে আসলে রাষ্ট্র চলতে পারে না। একটি সম্মিলিত সরকারি দল, বিরোধী দল এবং সকলের সম্মিলিত চিন্তা শক্তির মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে হবে।
হারুনুর রশিদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বয়স ৫০ বছর হয়েছে। এখনও বিচারক নিয়োগে কাঠামো তৈরি করতে পারিনি। ৫০ বছর পর বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল শব্দটি বাদ দিলেন। নিঃসন্দেহে এটি অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য এবং এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের প্রধান সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছিলেন বাংলাদেশে আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখতে চাই না। কিন্তু এরপর থেমেছে? বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের খুব লজ্জা লাগে। যখন বাইরে চলাফেরা করি আমাদের মুখে কাপড় দিতে হয়। সংসদে কথা বলার কারণে মানুষ আমাদের দিকে তাকায়। সরকারি দলের মন্ত্রীদের নিয়ে আমাদের উপহাস করে। বলে আপনারা কি সরকারি দলের মন্ত্রীদের ভাড়া করেছেন নাকি? আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা সারাদিন বয়ান করছে বিএনপি ভোট বর্জন করছে, বিএনপির জনসমর্থন নাই। বিএনপি এজেন্ট দিতে পারে না, বিএনপিতে প্রার্থী প্রত্যাহার করছে। মনে হচ্ছে তারা আমাদের বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির নেতা। বিএনপির দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এটা লজ্জা হয়।
হারুনুর রশিদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ভোট তো রাতে হয়ে যায়। তাহলে নির্বাচন কমিশনের দরকার কি? নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত করে দেওয়া ভাল। এটি বিলুপ্তি করে দিন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এসএসএ