৫ বছর পর বেরোবিতে ছাত্রদলের কমিটি, শিবির-অছাত্রদের রাখার অভিযোগ
১৭ জুন ২০২১ ১৯:৪৬
দীর্ঘ ৫ বছর পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ১১ সদস্যের এই কমিটিতে শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত, অছাত্র, চাকরিজীবী ও জেলা নেতাদের স্থান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৬ জুন) সংগঠনেরকেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ১১ সদস্যের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কমিটিতে ইংরেজি বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী আল আমিন ইসলামকে আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের রাশেদ মন্ডলকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় বিগত কমিটির নেতাদের অভিযোগ, নতুন কমিটির আহ্বায়ক আল আমিন ইসলাম কিছুদিন আগে রংপুর জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসাধারণ সম্পাদক হয়েছে। জেলা কমিটির নেতা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিভাবে রাজনীতি করবেন— এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে আল আমিন ইসলাম বলেন, জেলার কমিটিতে একাধিক ‘আল আমিন’ নামে পদধারী ব্যক্তি রয়েছেন। সেখানে আমাকে কোনো পদ দেওয়া হয়েছে কি না, আমি জানি না। সংগঠনকে গতিশীল রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, কেন্দ্র আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা যথাযথভাবে পালন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এদিকে নতুন কমিটির সদস্য সচিব রাশেদ মন্ডলের বিরুদ্ধে সংগঠনে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন একাধিক ছাত্রদল নেতা। তারা বলছেন, রাশেদ মন্ডল ছাত্রদলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই অনিয়মিত। পুরনো-নতুন কমিটির কারও সঙ্গেই তার পরিচয় নেই।
কমিটির কাউকেই চেনেন না— এমন অভিযোগ অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন রাশেদ মন্ডল। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির বাইরে আছি। আমি রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চাই। এ বিষয়ে আমি কেন্দ্রে কথা বলব।
এদিকে, কমিটিতে ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪ সালের রংপুর নগরীর মর্ডান মোড় থেকে শিবিরকর্মীর সঙ্গে নাশকতা করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে একমাসের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, কাউসার মাহমুদ ছাত্রদলের কেউ না, হুট করে শিবির থেকে ছাত্রদলে এসে যোগ দিয়েছেন।
আর কমিটিতে ২ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রাখা হয়েছে গণিত বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামানকে। তিনি পীরগঞ্জের একটি হাইস্কুলে বর্তমানে চাকরি করেন বলে জানা গেছে। এসব বিষয়ে কাউসার মাহমুদ ও কামরুজ্জামানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নতুন আহ্বায়ক আল আমিনের দাবি, কাউসার মাহমুদ প্রথম থেকেই ছাত্রদলের প্রথম সারির নেতা। ২০১৪ সালে পুলিশের সাজানো শিবিরের নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
১১ সদস্যের কমিটির বাকিরা হলেন— যুগ্ম আহ্বায়ক সবুজ ইসলাম, মাহফুজুল আলম শাওন ও আরিফুল ইসলাম। সদস্য হিসেবে রয়েছেন— আল আমিন মিয়া, এ এম মঈন শরীফ আহমেদ, সৈকত মাহমুদ ও হযরত আলী।
এর আগে, সবশেষ ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। গণিত বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম লিমনকে সভাপতি ও ইংরেজি বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ইমরান খান শ্রাবণকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছরের জন্য ১২ সদস্যের ওই কমিটির অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্র।
সারাবাংলা/টিআর