একমুঠো ভাত— অভিনব উপায়ে আবরার হত্যার বিচার দাবি অঙ্কুরের
১৮ জুন ২০২১ ২০:২৫
অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি— এমন অভিনব উপায়ে বিচার দাবি আগে কেউ দেখেছে কি না কে জানে! তবে দেশব্যাপী এই কাজটিই করে দেখিয়েছে অঙ্কুর ফাউন্ডেশন নামক একটি সংগঠন। অসহায় মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।
শুক্রবার (১৮ জুন) দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় প্রায় ২১০ জন জেলা অ্যাম্বাসেডরের সহায়তায় একমুঠো ভাত কর্মসূচির মাধ্যমে অসহায় মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দিয়েছে অঙ্কুর ফাউন্ডেশন।
সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক আলাউদ্দিন আল আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের দাবি— একজন শিক্ষার্থীকে দীর্ঘ চার ঘণ্টা পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে কিছু বিপথগামী শিক্ষার্থী। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অসহায় মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি।
অঙ্কুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা ২০০৭ সালে। বুয়েটের সাবেক শিক্ষক শায়েস্তাগির চৌধুরী এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। এরপর একযুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় জনহিতকর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। বিশেষ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সংকটকালে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে সহায়তা করা হয়েছে অঙ্কুরের পক্ষ থেকে, গত বছর ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানে গৃহহীন হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে অনুদান।
আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ২০১২ সাল থেকে এই সংগঠনটির কার্যক্রমে যুক্ত। এই সংগঠনটির হয়ে করোনাকালে এবং আম্পান-পরবর্তী সময়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। আমাদের এবারের আয়োজন আবরার ফাহাদকে নিয়ে। নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার এই শিক্ষার্থীর হত্যাকারীদের বিচার চাই আমরা।
এর আগে, সকাল ১০টায় আবরার ফাহাদের পৈত্রিক নিবাস কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীতে এক মুঠো ভাত কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। পরে এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর আড়াইটার দিকে বুয়েট শহিদ মিনারের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
অঙ্কুর ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবী সদস্য সুস্মিতা মজুমদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংগঠনটির বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে বুয়েট প্রাঙ্গণে অসহায় মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেন উপস্থিত কর্মীরা।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিপল-ই বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের আবার দায়ের করা হত্যা মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে সাফাই সাক্ষী গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে মামলার কার্যক্রম কিছুটা হলেও স্তিমিত হয়ে পড়েছে।
সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর