১১ গ্রেডে বেতন দাবি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের
১৮ জুন ২০২১ ২২:৩৯
ঢাকা: ১১তম বেতন গ্রেড অনুসারে বেতন-ভাতা প্রদানসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা। এ সময় এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণসহ তাদের পদের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ করারও দাবি করা হয়।
শুক্রবার (১৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় লিখিত লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার মন্টু।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিনিয়তই প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকি। শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিমাসে নিয়মিত বেতন-বিল প্রস্তুত করে ব্যাংক হিসাবে পাঠানো, শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত কাজ করা, রেজিস্ট্রেশন, উপবৃত্তি, ব্যানবেইস, মাউস, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক তথ্য পাঠানো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করি। দেশের সব স্তরের মানুষ এ করোনাকালে বিভিন্নভাবে সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে আজও সুবিধাবঞ্চিত। চাকরিতে যোগদানের তারিখ থেকে অবসরগ্রহণ পর্যন্ত আমাদের বেতন গ্রেড পরিবর্তন হয় না।
রফিকুল ইসলাম তালুকদার আরও বলেন, চাকরি জীবনে নেই কোনো পদোন্নতি। ‘চাকরিবিধি ২০১২’ নীতিমালা অনুসরণ না করায় নেই কোনো কর্মঘণ্টা। আমাদের দেওয়া হয় না ওভারটাইম ভাতা, মানা হয় না ছুটির বিধি-নিয়ম। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের সব কার্যক্রম করতে হয়। কিন্তু আমাদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কম্পিউটারসহ অন্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুপাতে শিক্ষক এবং তাদের বেতন গ্রেড বাড়ে, আমাদের সংখ্যা-বেতন গ্রেড পরিবর্তন হয় না। এমন অবস্থায় আমরা চরম হতাশাই দিন কাটাচ্ছি। সরকার বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে যাচ্ছি না। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। ২০ থেকে ১১তম গ্রেডে বেতনের অনেক বৈষম্য রয়েছে, তা কমিয়ে আনতে হবে।
এসব দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের যেকোনো দাবি আদায়ে পাশে আছি। সারাদেশে ১৫ মাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে কিন্তু অফিস সহকারীদের কোনো ছুটি নেই। সারাক্ষণ থাকতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষকরা উন্নত প্রশিক্ষণ করতে পারলে, অফিস সহকারীদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে তাদের দক্ষতা আরও বাড়বে। শিক্ষক, প্রতিষ্ঠানের দাবি পূরণ হয়েছে কিন্তু অতীতে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি পূরণ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষণে বলেছিলেন— অফিস সহকারীরা মানুষ, এরা আমলা নয়। তাই বেতনের পার্থক্য কমাতে হবে। শিক্ষকদের কাজের সময় নির্ধারিত কিন্তু অফিস সহকারী হিসেবে কাজের সময় নির্ধারণ করতে হবে। অতিরিক্ত কাজের জন্য বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে।
এ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি জিয়া শাহীন, কার্তিক সরকার, নার্গিস নাহার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান আপন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণে সভাপতি শাহনাজ পারভীনসহ আরও অনেকেই উপস্থিতি ছিলেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এনএস
১১ গ্রেডে বেতন দাবি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান