পুঁজিবাজারে বিনিযোগকারীদের আস্থা বেড়েছে: সালমান এফ রহমান
১৯ জুন ২০২১ ১৭:০২
ঢাকা: পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে দৈনিক লেনদন অনেক বেড়ে গেছে, বেড়েছে বাজার মূলধনও। গত একবছরে বিএসইসি নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার পাওয়ার পর পুঁজিবাজারে আমরা নতুন ধরন দেখতে পাচ্ছি। এছাড়াও কিছুদিন আগে এইচএসবি ব্যাংক তাদের এক রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের মধ্যে সব থেকে ভালো পারফরমেন্স করেছে।
শনিবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘বাজেট পরবর্তী আলোচনা ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পথ’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসাইন, বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান ও সিএমজেএফ সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল।
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘শেয়ারবাজার ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্ব বাড়বে। এক্ষেত্রে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ম্যানেজমেন্টের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শেয়ারবাজার যেভাবে পরিচালিত হয় এবং সেখানে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে, সেগুলো আমাদেরও চালু করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের মার্কেটে এখন অনেক সুযোগ আছে। নতুন নতুন অনেক ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে আসা হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল করার জন্য বিএসইসি অনেকগুলো সুন্দর পদক্ষেপ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর লোয়ার একটা ক্যাপ (ফ্লোর প্রাইস) ছিল, সেটা তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, তাতে পুঁজিবাজারে খুবই ভালো ভবিষ্যৎ দেখছি।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে একটি বেসিক স্ট্রাকচারাল কন্ট্রাডিকশন রয়ে গেছে। যেটা হচ্ছে আমাদের ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও অনেক কম। সাউথ এশিয়ার মধ্যে সব থেকে কম। আমাদের ট্যাক্স টু জিডিপি পাকিস্তানের থেকেও কম। এবার এটা ১০ শতাংশের নিচে চলে এসেছে।’
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার দাবি আমরা আগেই জানিয়েছি। বিশেষ করে যাদের কাছে অপ্রদর্শিত অর্থ আছে সেটা লিগ্যাল ফর্মে নিয়ে আসার সুযোগ রাখা যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘বন্ডগুলো নিয়ে আমরা কিছু প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। আশা করব বন্ড এবং সুকুক নিয়ে আমাদের যে পরিকল্পনা আছে, তা ফিসক্যাল পলিসির মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাহায্য-সহযোগিতা করবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার তালিকাভুক্ত কোম্পানির ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও কমানো হবে বলে আমরা আশা করতে পারি। সব মিলিয়ে এবারের বাজেট ‘মেড ইন বাংলাদেশ বাজেট’।
বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা গত ২০ বছর ধরে যে শেয়ারবাজার দেখে আসছি, সেখানে পরিবর্তন আনা দরকার। এজন্য নতুন প্রোডাক্ট আনা ও স্ট্র্যাটেজি নিতে হবে।’
বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমানো হয়েছে। এটা ভালো সিদ্ধান্ত। এর ফলে কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। এর মাধ্যমে উভয় ক্ষেত্রের মধ্যে করহারের ব্যবধান সাড়ে ৭ শতাংশ। কিন্তু একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিভিন্ন নিয়ম-কানুন মেনে চলার কারণে ব্যয় অনেক বেশি হয়। যে কারণে ভালো মুনাফা করা বৃহৎ কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হতে চাইবে না। এই সমস্যা সমাধনে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান ১৫ শতাংশ করা উচিত।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম