আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে পিপিপি মডেল ‘নগদ’-এর উদ্ভাবন অনুসরণে আগ্রহ
১৯ জুন ২০২১ ১৮:০৩
বাংলাদেশ সরকারের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) পরিচালিত ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম সারির নেতারা। তারা বলেছেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে থাকা মানুষদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে আনতে ‘নগদ’ রোল মডেলের ভূমিকা পালন করতে পারে।
শনিবার (১৯ জুন) নগদ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি) আয়োজিত ‘১১তম সিইও টক’ ওয়েবিনার আয়োজন করে। ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতারা ‘নগদ’-এর উদ্ভাবন অনুসরণ করে নিজ নিজ দেশে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির গতি সঞ্চারের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহপ্রতিষ্ঠাতা তানভীর এ মিশুক ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নেন। তিনি বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে সঠিক যন্ত্রপাতি ও উদ্যোগ থাকলে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সরকার পিপিপি সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
তানভীর এ মিশুক তার ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়ে বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের নাগরিকদের জন্য ৩৬০ ডিগ্রি আর্থিক সেবা দেওয়ার জন্য ডিজিটাল ব্যাংক দেওয়ার পরিকল্পনার রয়েছে তার।
ওয়েবিনারে এআইটি’র স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের ডিরেক্টর ড. সান্দার ভেঙ্কটেশের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন এআইটি’র নলেজ ট্রান্সফার বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. নাভিদ আনোয়ার।
বাংলাদেশ রেটিং এজেন্সি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সৈয়দ আবদুল্লা আল মামুন ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বলেন, ‘আমি নগদ’-এর যাত্রাকে স্বাগত জানাই। বিশেষ করে তারা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উদ্ভাবন নিয়ে এসেছে, যেটি সামনে আরও বেগবান হবে।’
নেপালের ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম লিমিটেডের ইন্টার্ন সিইও সঞ্জিব শুভ প্রথাগত ব্যাংকিং পদ্ধতির বিষয়ে বলেন, বড় জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো খুব কম সময়ের মধ্যে পড়ে যাবে। সেটি হতে পারে আগামী দশকের মধ্যে। আর এই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করবে এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে ডিজিটাল স্টার্টআপগুলো।
সঞ্জিব আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে ‘নগদ’-এর উদ্ভাবন ডিজটাল কেওয়াইসি দারুণ করছে এবং আগামীতে এটি গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে। আমার দেশেও এই ডিজিটাল কেওয়াইসি অনুসরণ করা যেতে পারে, আমি মনে করি যার মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ের ভাষাগত জটিলতা দূর করা সম্ভব।’ তিনি ‘নগদ’-এর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি দেখে অভিভূত হয়েছেন বলে জানান।
শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ড. উইরাকুন বিজয়াবর্ধনে, বাংলালিংকের সাবেক চিফ কমপ্লেইন্ট অফিসার এম নুরুল আলম, শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সিপিএ করুনাতিলক ওয়েবিনারে অংশ নেন। তারা উদ্ভাবন ও বিভিন্ন উদ্যোগের জন্য তানভীর এ মিশুকের প্রশংসা করেন। তারা সবাই বলেন, ‘নগদ’-কে অনুসরণ করে আরও অন্যান্য দেশে এমন মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘শুরুর দিকে আমরা আমাদের অংশীদারের কাছ থেকে অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি। পরে তারাও আমাদের সহযোগিতা করেছে। এর সঙ্গে সরকারের আন্তরিক সাহস পেয়ে আমরা প্রতিবন্ধকতা জয় করতে পেরেছি। এই অঞ্চলের অনেকেই লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের বিষয়ে অভিযোগ করেন। আসলে সঠিক সমাধান ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে এই প্রতিবন্ধকতা ভাঙা সম্ভব।’
২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করা ‘নগদ’ এখন দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)। এরই মধ্যে সফল একটি ব্যবসায়িক মডেল হিসেবে ‘নগদ’ সর্বজনস্বীকৃত। আর প্রযুক্তিগত দক্ষতাই এর অন্যতম কারণ। ফলে খুব অল্প সময়ে নিজেদের এই অবস্থানে নিতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যাত্রার ঠিক দুই বছরের মাথায় দেশের এক নম্বর ডাউনলোড অ্যাপের স্থানটিও ‘নগদ’ দখল করেছিল বলে উল্লেখ করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।
সারাবাংলা/টিআর
এআইটি এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি তানভীর এ মিশুক নগদ নগদ এমডি তানভীর এ মিশুক