পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে এবার মিলেছে ২৩৩৯৩৭৭৯ টাকা

কিশোরগঞ্জ: সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হয়। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দান সিন্দুক খোলার সময়ের ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে। এবার ৪ মাস ২৬ দিন পর এসব দান সিন্দুক খোলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলা হয়।
দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এবার ১২ বস্তা টাকা হয়েছে। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা।

টাকা গণনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদ মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আনসার এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ২ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ মিয়া এবং কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা ইয়াসমিনের তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উবায়দুর রহমান সাহেল, মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ, মো. ইব্রাহীম ও মাহামদুল হাসান, পাগলা মসজিদের পেশ ইমাম মুফতী খলিলুর রহমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, রূপালী ব্যংকের এজিএম মো. রফিকুল ইসলাম টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।

এসময় পাগলা মসজিদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আসাদ উল্লাহসহ সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কথিত আছে, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন।

পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে এবার দুই কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে জমা পড়েছে।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রসারিত হয়েছে মূল মসজিদ ভবন।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মসজিদটিকে ঘিরে চলছে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ।

এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

সারাবাংলা/এমও

দান সিন্দুক পাগলা মসজিদ