হঠাৎ বাড়ছে তিস্তার পানি, আতঙ্কে চরাঞ্চলের মানুষ
২১ জুন ২০২১ ০০:০৯
লালমনিরহাট: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে আবারও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পানি বাড়ায় জেলার ৬৩ চরের মানুষজন আতঙ্কিত অবস্থায় দিনযাপন করছেন।
রোববার (২০ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২.৪৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ (স্বাভাবিক ৫২.৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ব্যারাজের ৪৪টি কপাট (গেট) খুলে দেওয়া হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, রোববার সকাল ৯টা থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টায় ৫২.২০ সেন্টিমিটার, দুপুর ২টায় ৫২.৩০ সেন্টিমিটার ও সন্ধ্যা ৬টায় ৫২.৪৫ সেন্টিমিটার পানি অতিক্রম করেছে।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধির ফলে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ১০ দিনে তিস্তার ভাঙনে প্রায় ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় এলাকায় নিজেদের অর্থায়নে তৈরি করা এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বালুর বাঁধের অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সদর উপজেলার গোকুণ্ডা ও আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নে ভাঙন বেড়েই চলছে। ফলে সেখানকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম; হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, আরাজিছালাপাক, চন্ডিমারী, দক্ষিণবালাপাড়া পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশহর, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে পারে যেকোনো সময়।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে চরাঞ্চলের লোকজনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) আব্দুল আল মামুন বলেন, ‘উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’ এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/এমও