Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ জুন ২০২১ ২০:৪৫

ঠাকুরগাঁও: জেলা পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক/বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ইতিমধ্যে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়েছে। সেখানে অভিযোগ করে বলা হয়, অর্থের বিনিময়ে ৩৪ জন ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তির নির্দেশ দিয়েছেন খোদ জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য আসনের বিপরীতে বদলিজনিত কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির সুযোগ থাকলেও তা মানেননি জেলা প্রশাসক।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরে অবস্থিত ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩৮ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যবসায়ী তাদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন। গত ৩ জুন জেলা প্রশাসক ভর্তি কমিটির সভা ডেকে সদস্যদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। সে মোতাবেক ১২ জুন থেকে বিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি নেওয়া শুরু হয়। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩ জন এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২১ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে।

এই ভর্তির ক্ষেত্রে যারা সুযোগ পেয়েছেন তারা হলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নুর কুতুবুল আলমের মেয়ে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তাক আহম্মেদের ছেলে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী রশিদুল ইসলামের ছেলে, উপজেলা পরিষদের সিএ রেবা খাতুনের মেয়ে, খাদ্য বিভাগের গাড়িচালক শাহজাহান আলীর ছেলে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বাইরে রেখে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বাবলুর রহমানের মেয়ে, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্তের ছেলে, ব্যবসায়ী ওয়ালিউর রহমানের মেয়ে, রফিকুল ইসলামের ছেলেসহ অনেককে ভর্তি করানো হয়েছে।

ভর্তিবঞ্চিত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নিলুফার ইয়াসমিন অভিযোগ করে বলেন, ‘টাকা না দেওয়ায় আমার ছেলেকে ভর্তি করানোর সুপারিশ করেনি কমিটি। আমার ছেলের ভর্তির ব্যাপারে অবিচার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক অর্থের বিনিময়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমি আমার অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আইনের সাহায্য নেব।’

একই কথা বলেন হাজিপাড়ার বাসিন্দা আজিজুল হক, শান্তিনগরের সুধীর চন্দ্র, সরকারপাড়ার বাসিন্দা রেজাউলসহ অনেকে।

সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পীযুষ কান্ত রায় বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর করা রেজুলেশন পেয়ে ছাত্র ভর্তি করিয়েছি। এর বাইরে আর কিছু বলতে পারব না।’

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহানা খান বলেন, ‘ডিসি অফিস থেকে যা পাঠায় তাই আমাদের করতে হয়। জেলা প্রশাসক দুই স্কুলের সভাপতি, এখানে আমাদের করার কিছুই থাকে না। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তিনি যেটা পাঠাবেন সেটা নিতে হবে।’

ভর্তি কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘ভর্তি কমিটির সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়েছে। কমিটি সরকারি চাকরিজীবীর পাশাপাশি গণ্যমান্য ব্যক্তির সন্তানদের ভর্তির সুপারিশ করেছে। এটা অনিয়ম হয়েছে কিনা জানি না।’

সারাবাংলা/এমও

ভর্তিতে অনিয়ম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়