Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উৎপাদিত কৃষিপণ্যের এক-তৃতীয়াংশও ভোগ করেন না কৃষক: বিবিএস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ জুন ২০২১ ২০:১০

ঢাকা: ধান-গমের মতো কৃষিপণ্য কৃষকরা যতটুকু উৎপাদন করেন, তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ ভোগ করেন নিজেরা। বাজারে বিক্রিই হয় প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কৃষিপণ্য। দানাদার শস্য, তৈলবীজ, শাক-সবজি, আঁশ জাতীয় সফল ও মসলা জাতীয় শস্য কৃষকদের ভোগের পরিমাণ আরও কম। অন্যদিকে তামাক জাতীয় পণ্য কৃষকের ভোগের পরিমাণই বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথমবারের মতো পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার (২১ জুন) রাজধানীর আগাঁর গাও-এর পরিসংখ্যান ভবনে ‘কৃষি পণ্যের স্থুল বাজারজাতকৃত উদ্বৃত্ত জরিপ-২০২১’ শীর্ষক জরিপটির ফলপ্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জরিপ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ধান ও গমের মতো কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে কৃষকরা যে পরিমাণ উৎপাদন করে থাকেন, তার ৩৫ দশমিক ৪২ শতাংশ তারা নিজেরা ভোগ করেন, বাকি ৬৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ বিক্রির জন্য চলে যায় বাজারে। দানাদার শস্যের ক্ষেত্রে কৃষকরা ভোগ করেন ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, বাজারে যায় ৮১ দশমিক ১০ শতাংশ। তৈলবীজ জাতীয় শস্যের ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ ভোগ করেন কৃষকরা, বাকি ৭৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বিক্রির জন্য বাজারে নেওয়া হয়। আর ফাইবার জাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে কৃষকরা ভোগ করেন ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, বাজারে যায় ৯৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

এছাড়া, সবজি জাতীয় ফসল কৃষকরা ভোগ করেন ২৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, বাজারে চলে যায় ৭০ দশমিক ০১ শতাংশ। মোট উৎপাদিত শাকের ২২ দশমিক ৮১ শতাংশ কৃষকরা নিজেরা ভোগ করেন, বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান ৭৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। মসলা জাতীয় ফসলের ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোগ করেন কৃষকরা, বাকি ৮৬ দশমিক ২৮ শতাংশ যায় বাজারে। ফলের মধ্যে কৃষকরা ভোগ করেন ২০ দশমিক ১৮ শতাংশ, বাজারে বিক্রি হয় ৭৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর তামাক জাতীয় পণ্য কৃষকরা ভোগ করেন ৮২ দশমিক ৯৫ শতাংশ, বাজারে বিক্রির জন্য যায় ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অর্থনীতিতে এখনো কৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। এ খাতে প্রায় ৪১ শতাংশ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত কৃষি খাতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দেশের অর্থনীতিতে শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি অনেকাংশে কৃষি খাতের উদ্বৃত্তের ওপর নির্ভরশীল। এই খাতে উদ্বৃত্ত অপর্যাপ্ত হলে দেশ আমদানি করতে বাধ্য হয়, যা সরাসরি দেশের বাণিজ্য ভারসাম্য কমিয়ে দেয়।

জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) রি-বেজিং বা নতুন ভিত্তি নির্ধারণের জন্য এই জরিপটি পরিচালনা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব করা হয় ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তি ধরে। রি-বেজিং করার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছরকে ভিত্তি ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব করা হবে। এছাড়া, এতদিন বছরে একবারই জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব করা হলেও এখন তিন মাস পরপর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব করা হবে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যার ব্যুরোর অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মেজবাহুল আলম এবং অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শশাঙ্ক শেখর ভৌমিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জরিপের প্রকল্প পরিচালক জিয়াউদ্দিন আহমেদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, প্রথমবারের মতো এই জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির হিসাব করার ক্ষেত্রে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে। কোভিডের মধ্যেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিবিএসের কাজ থেকে নেই। হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে বিবিএস জাতীয় নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

কৃষিপণ্য পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস স্থুল বাজারজাতকৃত উদ্বৃত্ত জরিপ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর