Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জিপিতে ১৫৯ কর্মী ছাঁটাই, পুনর্বহালের জোর দাবি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২২ জুন ২০২১ ০৩:৫৩

ঢাকা: দেশের বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনে (জিপি) একসঙ্গে ১৫৯ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। অপারেটরটি বলছে, একবছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মহীন কিছু কর্মীকে তারা ছাঁটাই করেছে। এসব কর্মীকে স্বেচ্ছায় অবসরের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তারা সে সুযোগ নেননি। এই গণছাঁটাইয়ের নিন্দা জানিয়েছে এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন।

জানা গেছে, গ্রামীণফোন কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছা অবসর স্কিম (ভিআরএস) নেওয়ার সুযোগ দিয়েছিল দুই শতাধিক কর্মীকে। গত বছরও এই স্কিমের আওতায় প্রায় একশ কর্মী অবসর নিয়েছেন। এ বছরের ৩ জুন এই স্কিম নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ১৭ জুনের মধ্যে বিষয়টি জানাতে বলা হয়। ভিআরএস না নেওয়ায় রোববার (২০ জুন) ১৫৯ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গ্রামীণফোন ডিজিটালইজেশনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের পরিবর্তনশীল চাহিদা পূরণে সহায়তা করছে। এই যাত্রায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাজের দায়িত্ব ও পরিধিতে পরিবর্তন ঘটছে। এ কারণেই প্রায় ১৩ মাস ধরে বেশকিছু কর্মী গ্রামীণফোনে কর্মহীন ছিলেন। তাদের ছাঁটাই করতে হয়েছে। আর বিভিন্ন ধরনের কাজ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে করিয়ে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনাও তাদের পরিকল্পনার অংশ।

গ্রামীণফোন আরও বলছে, চাকরির বয়স বিবেচনায় সর্বোচ্চ ১০০টি বেসিক; অবসরে যাওয়ার পরও দুই বছর ধরে গ্রামীণফোনে কর্মরত অবস্থায় পাওয়া সুবিধা অব্যাহত থাকা; স্বাস্থ্যবীমার আওতায় অবসরে যাওয়া কর্মী, তাদের স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবা’র হাসপাতালে বহির্বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুবিধা ইত্যাদি থাকবে।

তবে স্বেচ্ছায় অবসরের প্রস্তাব কর্মীদের অনেকেই বলছেন, এটি ঐচ্ছিক হলেও তাদের ওপর এটি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাদের এই প্রস্তাব গ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে— এমনটি মনে হচ্ছিল তাদের। পরে তারা রোববার সন্ধ্যায় ছাঁটাইয়ের মেইল পেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। সোমবার (২১ জুন) রাতে গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক সারাবাংলাকে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে বিভাগ পুনর্গঠনের নাম করে প্রায় ১৬৭ জন কর্মীর কাজ বন্ধ করে রাখা হয়। এ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল কাজ করছিল। গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (জিপিইইউ) সিবিএ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার রাখে এবং সেই অনুযায়ী কাজ বন্ধ রাখা কর্মীদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিল।

তিনি আরও বলেন, গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে সুরাহা না করলে এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়। বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। অথচ গ্রামীণফোন আদালতের প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মান না দেখিয়ে ১৫৯ কর্মীকে ইমেইল পাঠিয়ে গণছাঁটাই করেছে। এটি কেবল মর্মান্তিক নয়, একইসঙ্গে বেআইনি। এ ধরনের বেআইনি ছাঁটাই গ্রামীণফোন কোনোভাবেই মেনে নেবে না।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এই ১৫৯ জন কর্মীকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন।

এদিকে, গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হকের নেতৃত্বে গ্রামীণফোনের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা অনলাইন মাধ্যমে একটি প্রতিবাদ সভাও আয়োজন করে। প্রতিবাদ সভাতেও গ্রামীণফোনের এই ছাঁটাইয়ের নিন্দা জানানো হয়। বলা হয়, গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ অনতিবিলম্বে ১৫৯ জন কর্মীকে চাকরিতে পুনর্বহাল না করলে এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আইনিভাবে, সামাজিকভাবে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সব ট্রেড ইউনিয়ন, মিডিয়া ও সমমনা বিভিন্ন পক্ষের সহযোগিতায় কঠোর কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে তাদের পুনর্বহাল করতে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করবে।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন কর্মী ছাঁটাই গ্রামীণফোন জিপিইইউ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর