২৩ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
২৩ জুন ২০২১ ০৮:৫৮
লালমনিরহাট: স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দীর্ঘ ২৩ বছর আত্মগোপন ছিলেন ফজর আলী (৬৫)। তিনি কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী সীমান্তে বিয়ে করে নতুন করে সংসার করেন। অবশেষে শেষ রক্ষা হলো না তার। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ফজর আলীকে (৬৫) গ্রেফতার করেছে আদিতমারী থানা পুলিশ।
ফজর আলী লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ গোবধা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে। গত রবিবার (২০ জুন) গভীর রাতে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ।
সোমবার (২১ জুন) দুপুরে আদিতমারী থানা পুলিশ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ফজর আলীকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন বলে ওসি সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ১৯৯৭ সালের দিকে উপজেলার দুর্গাপুরে ইউনিয়নের বাসিন্দা ফজর আলী পারিবারিক কলহের কারণে তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। সে সময় তিনি তার স্ত্রীকে হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেন।
তৎকালীণ আদিতমারী থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) গাউছুল আজম ও এসআই আ. সাত্তার ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা বুঝতে পেরেছিলেন এটি আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ড। তারপর শুরু হয় পুলিশের তদন্ত। পুলিশের তদন্ত ও ময়নাতদন্তে রিপোর্টে প্রমাণিত হয় আত্নহত্যা নয়, ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
পরে থানা পুলিশ ১৯৯৮ সালের দিকে আসামি ফজর আলীর বিরুদ্ধে পেনাল কোড এর ৩০২ ধারার অপরাধে অভিযুক্ত করে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর থেকে আসামি ফজর আলী পলাতক ছিলেন। পরে পুলিশের অভিযোগ পত্রের ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত আসামি ফজর আলী (৬৫) তার স্ত্রীকে হত্যার করেছেন মর্মে সন্দেহাতীতভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ পেয়ে আসামিকে তার অনুপস্থিতিতে বিজ্ঞ আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। সে সময় ফজর আলী ছিলেন ৩৫ বছরের টকবগে এক যুবক।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ফজর আলী স্ত্রীকে হত্যার পর সীমানা পার হয়ে বাকি জীবনটা ভারতের নাগরিক হয়ে থেকে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভারত তাকে আশ্রয় দেয়নি। ফিরে আসেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভারত সীমান্ত ঘেষা দূর্গম একটি গ্রামে। সেখানেই তিনি নিজেকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে কাটিয়ে দেয় জীবনের ২২/২৩ বছর। নতুন করে আবারও বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘ ২২/২৩ বছর পলাতক থাকার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতার করা পুলিশের একটি বড় সাফল্য বলে তিনি মনে করেন।
সারাবাংলা/এএম