অটোরিকশায় ঘুরে শহরজুড়ে ছিনতাই, গ্রেফতার ৪
২৩ জুন ২০২১ ১৯:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে অটোরিকশা চালকসহ ছিনতাইয়ে জড়িত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা অটোরিকশা নিয়ে ভোর থেকে সকাল গড়ানোর আগ পর্যন্ত, আবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুরো শহরজুড়ে ঘুরে ঘুরে ছিনতাই করতেন।
মঙ্গলবার (২২ জুন) রাতে নগরীর কোতোয়ালি ও বাকলিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই চার জনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতার চার জন হলেন— মনির হোসেন (১৯), মো. জসিম (৪২), মো. ইমরান (২০) ও আব্দুল্লাহ আল নোমান (১৯)।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে মনির ও জসিমকে নগরীর বান্ডেল রোড থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। মনিরকে পাশে বসিয়ে জসিম অটোরিকশা নিয়ে ওই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিল। মনিরের কাছে একটি ছোরা ও অটোরিকশার ভেতর একটি স্টিলের পাইপ পাওয়া যায়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইমরানকে বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল ও নোমানকে কালামিয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছিনতাইকারী দলটির প্রধান মনির। তারা সবাই উঠতি বয়সের। তাদের দলে ৭-৮ জন আছে, এর মধ্যে কমপক্ষে দু’জন অটোরিকশাচালক। তাদের ছিনতাইয়ের ধরন হচ্ছে— তারা একটি অটোরিকশায় করে তিন জন করে বের হবেন ভোরে, আবার এরপর সন্ধ্যায়। দু’টি অটোরিকশা পৃথক দুই জায়গা থেকে বের হবে। আজ কেউ বহদ্দারহাট থেকে বের হলে, আগামীকাল বের হবে পতেঙ্গা থেকে। আবার আজ কেউ নিউমার্কেট থেকে বের হলে কাল বের হবে চকবাজার থেকে। এভাবে পুরো শহর ঘুরে ঘুরে তারা ছিনতাই করে।’
গ্রেফতার জসিম পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক। পুলিশ হেফাজতে থাকা জসিম সারাবাংলাকে জানান, প্রথমদিকে ভাড়ার বিনিময়ে অটোরিকশায় করে ছিনতাইকারীদের নিয়ে ঘুরত। এভাবে মনিরের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর জড়িয়ে পড়েন ছিনতাইকারী গ্রুপে।
মনির সারাবাংলাকে জানান, তারা সাধারণত নির্জন স্থানে পথচারী কিংবা রিকশা আরোহী পেলে গতিরোধ করে ছিনতাই করে। আর তাদের টার্গেট থাকে বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ, মার্কেট ও শপিং মলের প্রহরীরা। তাদের কাছ থেকে ছোরার ভয় দেখিয়ে সহজেই মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া যায়। গ্রেফতার ইমরান ও নোমান মনিরের আগে থেকেই ছিনতাই করে আসছে। তবে এখন মনিরই তাদের ৭-৮ জনের গ্রুপে নেতৃত্ব দেয়।
ওসি নেজাম বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, বড় ধরনের ছিনতাই সাধারণত তারা করে না। তাদের টার্গেট শুধু মোবাইল-মানিব্যাগ। একটি অল্প দামের মোবাইল কিংবা মানিব্যাগে থাকা অল্প টাকার জন্য হয়তো অনেকেই থানায় অভিযোগ করতে আসেন না। সেই সুযোগটাই এই ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শাহীন ও সাজ্জাদ নামে আরও দু’জনের তথ্য দিয়েছে। তাদের ধরতে চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়েছিলাম। তবে তাদের পাওয়া যায়নি।’
সারাবাংলা/আরডি/টিআর