এনবিআরের কাছে পোশাক মালিকদের একগুচ্ছ প্রস্তাবনা
২৪ জুন ২০২১ ০০:২২
ঢাকা: পোশাক শিল্পে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত নীতি সহায়তা দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
বুধবার (২৩ জুন) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ’র একটি প্রতিনিধি দল এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব দাবি তুলে ধরেন।
বিজিএমইএ প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন; বিজিএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম; সহসভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, মো. নাসির উদ্দিন ও রাকিবুল আলম চৌধুরী; পরিচালক আসিফ আশরাফ ও মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার); সাবেক পরিচালক মো. মুনির হোসেনসহ অন্যরা।
সভায় বিকেএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে সদস্য (আয়কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য (শুল্ক নীতি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া, সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো. মাসুদ সাদিক ও সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটি) ড. আব্দুল মান্নান শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে শিল্পকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত নীতি সহায়তা দেওয়া রা হলে তা শিল্পকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
সভায় সার্বিকভাবে পোশাক শিল্পে বিদ্যমান কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় বিজিএমইএ প্রতিনিধি দল পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত জরুরি কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত কিছু প্রস্তাবনাও উত্থাপন করেন। রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রস্তাবনাগুলো গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করে যৌক্তিকতা অনুযায়ী সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো হলো— পোশাক শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে নগদ সহায়তার ওপর আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য শতাংশ নির্ধারণ করা এবং তা আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখা; রফতানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর (দশমিক ৫ শতাংশ) চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচনা করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখা; তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য করপোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ এবং গ্রিন কারখানার জন্য এই হার ১০ শতাংশ আগামী ৫ বছর পর্যন্ত বলবৎ রাখা। এসআরও তালিকাভুক্ত সব অগ্নি-নির্বাপণ পণ্য বা উপকরণ বিকল বা নষ্ট হলে অগ্নি-প্রতিরোধক দরজার মতো একই শর্তে প্রতিস্থাপনের জন্য রেয়াতি হারে শুল্কায়নের মাধ্যমে আমদানির সুবিধা দেওয়া; ইপিজেড এলাকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাব-কন্ট্রাক্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য অস্থায়ী বন্ড স্থানান্তর প্রক্রিয়া সহজ করা; ইউডি বহির্ভূত ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি’র মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাঁচামাল বা উপকরণ ইউডি সংশোধনীর মাধ্যমে নিরীক্ষায় সমন্বয় করে নিরীক্ষাকার্য সম্পাদনের জন্য কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া।
বিজিএমইএ’র প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে— সূতা থেকে নিট গার্মেন্টস উৎপাদনে অপচয় হার বৃদ্ধির কারণে জরিমানা আরোপ ও কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না করে রফতানিতে সহযোগিতা করা; তৈরি পোশাক শিল্পের ওভেন গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে বার্ষিক নিরীক্ষাকালে আমদানি-রফতানির পরিমাণ নির্ধারণে কেজি’র পরিবর্তে আগের মতো গজ বা মিটার বা নিজ নিজ একক ব্যবহার করা; বন্ড লাইসেন্সধারী প্রচ্ছন্ন রফতানি প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য ও সেবা যেমন— প্যাকেজিং, কার্টন, হ্যাংগার, প্লাস্টিকজাত পণ্য, অ্যাকসেসরিজ ও সোয়েটারের সূতা শতভাগ রফতানিমুখী বন্ড লাইসেন্স বিহীন প্রত্যক্ষ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করতে আগের মতো ইউপি অব্যাহত রাখা; ফেরত পণ্য পুনঃরফতানির ক্ষেত্রে মেয়াদ ছয় মাসের পরিবর্তে একবছর পর্যন্ত বাড়ানো। এছাড়াও আরও বেশ কিছু দাবি রয়েছে সংগঠনটির।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর