বিদেশি নাগরিকদের মামলা করতে পাসপোর্ট লাগবে: হাইকোর্ট
২৪ জুন ২০২১ ০১:৩০
ঢাকা: থানায় বা আদালতে মামলা করতে অভিযোগকারীর (বাদী) জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর অথবা পাসপোর্ট নম্বর দিতে হবে। আর বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে তাকে শনাক্তকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর মামলায় উল্লেখ করতে হবে। এ ছাড়া মামলা করার জন্য এজাহারে বিদেশি নাগরিকদের পাসপোর্ট নম্বর দিতে হবে।
মামলা করার ক্ষেত্রে বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট থাকাসহ পাঁচদফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলা করতে অভিযোগকারীর (বাদী) পরিচয় যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে আদালত এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ‘অস্তিত্বহীন’ বাদীর করা ৪৯ মামলায় প্রতিকার চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে এমন আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গত ১৪ জুন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বুধবার (২৩ জুন) প্রকাশিত হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়েছে, বর্তমান সময় থেকে থানায় বা সংশ্লিষ্ট আদালত ও ট্রাইব্যুনালে এজাহার বা অভিযোগ দায়ের করার সময় অভিযোগকারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া এবং সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হলো।
এগুলো হলো
এক. অভিযোগ বা এজাহারে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, ক্ষেত্রমত পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
দুই. এজাহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে সেক্ষেত্রে এজাহারকারীকে শনাক্তকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
তিন. বিশেষ বাস্তব পরিস্থিতিতে পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট এভেইলেবল না হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা এজাহারকারীর পরিচয় নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন।
চার. আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট না থাকলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অভিযোগকারীকে শনাক্ত করবেন।
পাঁচ. অভিযোগকারী বিদেশি বা প্রবাসী নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট দেশের পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
একইসঙ্গে রুল জারি করে ৬০ দিনের ওইসব মামলা দায়েরের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এমাদুল হক বসির।
আইনজীবী এমাদুল হক বসির জানান, ঢাকার শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি ডাকাতি, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় তিনি ১ হাজার ৪৬৫ দিন জেল খেটেছেন। কিন্তু একটি মামলারও বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিবেচনায় তিনি অনেক মামলাতে খালাস পেয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। পরে আদালত এই নির্দেশনা দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে