অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে ৯৩ শতাংশ অ্যান্টিবডি
২৭ জুন ২০২১ ১৪:০৭
ঢাকা: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মানুষের শরীরে ৯৩ শতাংশ অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব পেয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষণা দল। ৩০৮ জনের ওপর পাঁচ মাস গবেষণা করে তারা এ ফল পান।
রোববার (২৭ জুন) ঢাকা মেডিকেল কলেজে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন মাইক্রোবায়োলজির চিকিৎসকরা।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম সামসুজ্জামান বলেন, ‘জানুয়ারি মাস থেকে চলতি জুন মাস পর্যন্ত আমরা ৩০৮ জনের ওপর এ গবেষণা চালাই। এর মধ্যে শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীর নমুনা নেওয়া হয়। যাদের ৭০ শতাংশ শিক্ষক, ১০ শতাংশ কর্মচারী ও বাকিরা চিকিৎসক। এরা সবাই করোনার চিকিৎসা বা ভ্যাক্সিনেশনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত।
ডা. সামসুজ্জামান বলেন, ‘এদের মধ্যে যারা ১ম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিল তার ৩৫ দিনের মধ্যে প্রথম রক্তের নমুনা নিই। ২য় ডোজ নেওয়ার ১৪দিন পরে আবার নমুনা নেওয়া হয়। এরপর তা গবেষণা করে দেখা গেছে ১ম ডোজ নেওয়ার পর ৪১ শতাংশ ও ২য় ডোজ নেওয়ার পর ৯৩ শতাংশ শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জানা দরকার ছিল এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আদৌ কাজ করবে কি না, ১ম ডোজ দেওয়ার পর কী হবে, ২য় ডোজ দেওয়ার পর কী হবে, অ্যান্টিবডি তৈরি হবে কিনা, সে জন্য আমরা এ গবেষণা শুরু করি। জার্মানির কিট দিয়ে মূলত এ গবেষণা চালানো হয়। যার একেকটি নমুনা পরীক্ষা করতেই খরচ হয়েছে ১১শ টাকা। যাদের নিয়ে এ গবেষণা চালানো হয়েছে তাদের বয়স ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে ও ৬০ বছরের নিচে। আর ৪০-৫০ বছরের মধ্যেই ছিলেন ৮০ শতাংশ। গবেষণাটি এখানেই শেষ না। আরও গবেষণা করে দেখা হবে কোন গ্রুপের মধ্যে কত শতাংশ অ্যান্টিবডি তৈরি হয় আর এটি কতদিন পর্যন্ত শরীরে স্থায়ী হয়।’
এই গবেষণার জন্য ৩০৮ জনের নমুনা কম হয়ে গেল কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জাবাবে ডা. সামসুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সকল মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, চিকিৎসকদের এ গবেষণায় অংশ নিতে বলেছিলাম। যারা যারা এসেছে তাদের সবাইকে নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া মানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হবে না এমন নয়, আক্রান্ত হতে পারে। মৃদুভাবে আক্রান্ত হতে পারে। তবে তাদেরকে ভেন্টিলেটরে যেতে হবে না বা মারা যাবে না বলে আশা করা যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে আরও বিশ্লেষণ করতে হবে। আমরা যতগুলো নমুনা নিয়েছি সেটিও কম ছিলে না। আমাদের সক্ষমতা আছে, আমরা ফান্ড পেলে আরও বড়বড় গবেষণা করতে পারব।’
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘এই ভ্যকসিন নিলে আমরা ভালো একটি প্রতিরক্ষা পেতে পারি। গবেষণায় যারা কাজ করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আমাদের আরও গবেষণা হবে। পরবর্তী গবেষণা গুলোতেও স্বাস্থ্য অধিদফতর আমাদের সাহায্য করবে।’
সারাবাংলা/এসএসআর/একে