আওয়ামী লীগ সরকারই কৃষককে সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দেয়: প্রধানমন্ত্রী
২৭ জুন ২০২১ ১৪:২৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারই সেই সরকার যে সরকার কৃষককে সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দেয়। তিনি বলেন, জাতির পিতা যা নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা এক একে সব করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, আমরা তা করে যাব এবং এই বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তুলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন আমরা পূরণ করব।
রোববার (২৭ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়ন প্রান্তে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী তিনটি ক্যাটাগরিতে ৩২জন পুরষ্কার বিজয়ীর হাতে পদক ও সম্মাননা পত্র তুলে দেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর উপর ‘বাণী চিরসবুজ ও স্মারক গ্রন্থ চিরঞ্জীব’ শীর্ষক দুইটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের প্রথম মেয়াদে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সংসদে যখন আমরা ঘোষণা দেই যে আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বিএনপির পক্ষ থেকে তখন প্রতিবাদ করা হয়। তারা বলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভাল না। বিএনপির কথাই ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভাল না, কারণ বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ সারাজীবন বাংলাদেশ অন্যের কাছে হাত পেতে চলবে, ভিক্ষা করে চলবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটা কথা বলতেন, যে ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। আমরা ভিক্ষুক জাতি হব না। আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে, আমরা ফসল ফলাব, নিজের পায়ে দাঁড়াব, নিজের খাবার নিজে জোগাড় করব। আমাদেরও সেই নীতি। কিন্তু ওদের নীতি ছিল একটু ভিন্ন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষিখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য চাষী ভাইবোনদের যেমন কৃতিত্ব পাওয়ার দাবিদার। তেমনি আমাদের কৃষি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মীরাও সমান কৃতিত্বের অধিকারী।
পুরষ্কারপ্রাপ্তদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, মুজিববর্ষে যারা পুরষ্কৃত হলেন, এভাবে বারবার যেন আপনারা আরও পুরষ্কার পান, আরও অধিক সংখ্যক লোক যেন পুরষ্কার পায়। এটা যেন অব্যাহত থাকে। আপনারা দেখেছেন কোনো কাজকেই আমরা ছোট করে দেখি না। যখন ধান কাটার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। আমি যখন আমাদের ছাত্রলীগের ছেলেদের আহ্বান করলাম, তখন আমার সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সকল সহযোগী সংগঠন, তারা কিন্তু কৃষকের সঙ্গে মাঠে নেমে ধান কেটে বাড়ি পযন্ত পৌঁছে দিল। কাজেই আমরা মনে করি, এই মানসিকতাটাই আমাদের জন্য দরকার। সব কাজকে সম্মানজনকভাবে দেখা এবং সেই কাজে সকলকে সম্পৃক্ত হওয়া। তবেই দেশ এগিয়ে যাবে, তবেই আমার দেশের আরও উন্নয়ন হবে, আরো এগিয়ে যেতে পারব বলে মনে করি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা আমাদেরকে পথ দেখিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারই সেই সরকার যে সরকার কৃষককে সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দেয়। শুধু তাই না আমরা বর্গাচাষীদেরও বঞ্চিত করি নাই। বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের আমরা ঋণ দেওয়া শুর করি। তার উদ্দেশ্যটা ছিল তারা যেন তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে পারে এবং যাতে সক্ষমতা অর্জন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এই ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চলে গুরুত্ব দিতে চাই কৃষিপণ্য বা খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য। এই শিল্পগুলি শুধু শিল্পেই না, কৃষির জন্যও একটা বিরাট অবদান রাখতে পারবে। কারণ খাদ্যের চাহিদা বিশ্বে থাকবে। আর এই করোনাকালীন সময়ে তো খাদ্য চাহিদা আরও বাড়বে। সেই কারণেই আমরা যদি আমাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখি তাহলে নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারব। প্রয়োজনে অন্যকে আমরা সহযোগিতা করতে পারব। আর রফতানির ক্ষেত্রেও আমাদের পণ্য আমরা বৃদ্ধি করতে পারব।
বাংলাদেশ আর পিছিয়ে যাবে না, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে— উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, তার স্বপ্ন ছিল কৃষকের মুখে হাসি ফোটাবেন। শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটাবেন, গরীবের মুখে হাসি ফোটাবেন। বাংলাদেশ বিশ্বে আত্মমর্যাদাশীল দেশে উন্নীত হবে। ৭৫’র পর ২১টা বছর আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের আসার পর আমরা আমাদের মর্যাদা ফিরে আনতে সক্ষম হয়েছি।
দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে পরপর তিন বার আমাদেরকে নির্বাচিত করায়, একটা দীর্ঘ সময় পাওয়ায় আমাদের গবেষণায় যেমন সাফল্য হয়েছে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি, এবং সেই সঙ্গে দেশকে অর্থনৈতিকভাবেও এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, প্রত্যেক গ্রামে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি, রাস্তাঘাট উন্নত করে দিচ্ছি । জাতির পিতা যা নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা এক একে সব করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমরা করে যাব। এই বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন আমরা পূরণ করব।
সারাবাংলা/এনআর/এসএসএ