রাবিতে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের পদায়নের দাবিতে আন্দোলন
২৮ জুন ২০২১ ১৯:৫২
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপাচার্যের আমলে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে পদায়ন করতে না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন নিয়োগপ্রাপ্তরা।
সোমবার (২৮ জুন) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনের সামনে ‘অ্যাডহকে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
নিয়োগপ্রাপ্ত আতিকুর রহমান সুমনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে চাকরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা মো রাসেল বলেন, ‘আমরা এখনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্বাভাবিক কার্যক্রম চলতে দেবো না। আমাদের চাকরিতে পদায়নের সুযোগ না দিলে সবকিছু অচল করে দেওয়া হবে।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমরা জামাত-শিবিরের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করেছি। সাবেক উপাচার্য আমাদের চাকরি দিয়ে গেছেন। অথচ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সেই চাকরিতে আমাদের পদায়নে স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। কোন ক্ষমতাবলে তিনি আগুন নিয়ে খেলা করছেন?’
অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তার মধ্যে এসকে সিনহার প্রতিচ্ছবি দেখতে পান নিয়োগপ্রাপ্তরা।’
উচ্চমান সহকারী ও রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক
ওমর ফারুক ফারদিন বলেন, ‘রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা প্রকৃত আওয়ামী লীগ কি না সেটি প্রমাণের জন্য ডিএনএ টেস্ট করতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত চাকরিপ্রাপ্ত, ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা তাদের বক্তব্যে স্ব স্ব পদে পদায়নে অনুমতির দাবি জানান।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দেলওয়ার হোসেন ডিলস, ফিরোজ মাহমুদ, রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো রাসেল, ছাত্রলীগ নেতা মতিউর মর্তুজা। মহানগর যুবলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এস কে এম আরকান বাপ্পী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে (৬ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে যান। মন্ত্রণালয় সেদিনই এই নিয়োগ ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ৮ মে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এই ১৩৭ জনের চাকরিতে যোগদান প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে তদন্ত কমিটি গত ২৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত কমিটি বিদায়ী উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে। প্রতিবেদনে আবদুস সোবহানের দেশ ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এ পরিপ্রেক্ষিতে এখনও শিক্ষা মন্ত্রণালয় দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর মধ্যেই নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করছেন।
সারাবাংলা/পিটিএম