বাতিল ১০ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তালিকায় আরও ৩ প্রকল্প যুক্ত করার দাবি
২৮ জুন ২০২১ ২২:৩৮
ঢাকা: সরকার যে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার সঙ্গে বাঁশখালী, রামপাল ও মাতারবাড়ি প্রকল্পও বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ও জ্বালানি বিশেজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাতিলের তালিকায় প্রথমে থাকা উচিত ছিল বাঁশখালী ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র (প্রথম পর্যায়)। মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়ানো বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্যদিকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিবেশ ও সুন্দরবনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করবে।
সোমবার (২৮ জুন) এ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পরিবেশ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিলে সরকারের ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানাতে ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি)।
সংবাদ সম্মেলনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, পরিবেশের কথা চিন্তা করেই যদি সরকার ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করত, তাহলে সবার আগে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করা উচিত ছিল। মাতারবাড়িতে কোহেলিয়া নদী ভরাট করে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চলছে। এগুলোকে সবার আগে বাতিল করা উচিত ছিল। আর বাঁশখালী দাঁড়িয়ে আছে মানুষের রক্তের ওপর।
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সরকার এখন ১০টি কয়লা-বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করেছে, ভবিষ্যতে আরও এমন অনেক প্রকল্প বাতিল হবে। এটাই অনিবার্য ভবিষ্যৎ। যেগুলো বাতিল করা হয়েছে, সেগুলোতে হয় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অর্থায়ন করছে না, না হয় পৃষ্ঠপোষক কোম্পানিগুলো সরে যাচ্ছে।
কয়লা-বিদ্যুৎ অচল হয়ে যাওয়ায় এলএনজি লবিস্টরা এখন অনেক বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, এজন্য দেশীয় গ্যাসের আবিষ্কার ও উত্তোলন বন্ধ রেখে এবং নবায়নযোগ্য শক্তিকে অগ্রাধিকার না দিয়ে বিদেশি এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে সরকার অনেক বেশি উৎসাহী।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সরকারের সিদ্ধান্ত সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে যে পরিবেশ দূষণকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে সরে আসতে হবে। এজন্য তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। দেশি-বিদেশি জলবায়ুকর্মীরা অনেক দিন ধরে এ বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু এস আলমের গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য সরকার বাঁশখালীর মতো রক্তে ভেজা প্রকল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে, যা দুঃখজনক। বাতিল করা ১০টি প্রকল্পের মতো বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রও বাতিলের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোটের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, সদস্য সচিব হাসান মেহেদী বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী সদস্য সাজিয়া শারমিন।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর
আনু মুহাম্মদ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান