Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আসিয়ানে ঘনিষ্ঠতা চায় বাংলাদেশ, চোখ রোহিঙ্গাসহ দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে

এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ জুন ২০২১ ১০:১০

ঢাকা: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াতে চায় সরকার। আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিরক্ষা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, শিক্ষা, রোহিঙ্গা সংকটসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সকল বিষয়ে উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার মাধ্যমে আসিয়ান দেশগুলোতে নিযুক্ত দেশের দূতদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি বাংলাদেশে নিযুক্ত আসিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মিশন প্রধানদের সঙ্গেও বৈঠক করে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার বিষয়ে সরকারের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ওই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর প্রভাবে মিয়ানমার প্রভাবিত হয়। তাই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্থায়ী সমাধানের জন্য বাংলাদেশ আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সহযোগিতা পেতে আগ্রহী। এ জন্য আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার উদ্যোগ নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে গত ৭ জুন সমসাময়িক বিষয়াবলি নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। আসিয়ান অঞ্চলের আটটি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্য বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষা ও বিশেষভাবে আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের বিশেষভাবে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানান। তিনি রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের চলমান বৈশ্বিক মহামারি এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখতে উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার মাধ্যমে কার্যক্রম হাতে নিতে বলেন।

ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন কূটনীতিক সারাবাংলাকে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে দূতদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন— আসিয়ানের বর্তমান চেয়ার হচ্ছে ব্রুনেই। তাই ব্রুনেইকে এই ইস্যুতে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ আসিয়ান দেশগুলো রোহিঙ্গা ইস্যুতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংকট কাটাতে এসব দেশকে কাজে লাগাতে হবে।

আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ইস্যুতে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক কোন পর্যায়ে ঘনিষ্ট করতে চায়, সেটি সবার আগে দেখতে হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্ক ঠিক আছে। তবে কৌশলগত সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করা গেলে আসিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে টেকসই যোগাযোগ কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব, যেখানে সবারই স্বার্থ বজায় থাকবে।

এরকম সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারলে সেটি রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজে আসবে বলে মনে করেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে সুফল মিলবে। কেননা মিয়ানমারকে চীন ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোই একমাত্র চাপে রাখতে পারে। তাই আসিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ভালো উদ্যোগ নেওয়া আরও আগেই প্রয়োজন ছিল।

সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর

আসিয়ান দ্বিপক্ষীয় ইস্যু রোহিঙ্গা সমস্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর