লকডাউনে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া হাঁকাচ্ছে রিকশাওয়ালারা
২৯ জুন ২০২১ ১৬:৫১
বরিশাল: সম্প্রতি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) মৃত্যু ও সংক্রমণ হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৮ জুন) সকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে সীমিত লকডাউন। নতুন বিধি-নিষেধের আওতায় পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।
সুযোগ পেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া হাঁকাচ্ছে রিকশা চালকরা। বাধ্য হয়ে ৩০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দিয়ে রিকশায় চড়ে অনেকে ছুটে চলেছেন গন্তব্যের দিকে। আবার অনেকেই পায়ে হেঁটেও গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল থেকে বরিশাল নগরীর সড়কগুলোতে দেখা গেছে রিকশার এই দাপট।
রিকশাওয়ালাদের পকেট কাটার বেশি শিকার হয়েছেন অফিসগামীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কোনো গাড়ি না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুণে অফিসের দিকে ছুটে চলেছেন তারা।
নগরীর চৌমাথা এলাকায় কথা হয় হাসান বিশ্বাস নামে এক বেসরকারি চাকুরের সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কষ্টে উপার্জিত টাকা রাস্তায়ই চলে যাচ্ছে। চৌমাথা থেকে রূপাতলী যাচ্ছি ১০০ টাকা ভাড়ায়। তাও সঙ্গে আরেকজনকে নিয়েছেন রিকশাওয়ালা।
ভাটিখানা এলাকায় কথা হয় সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবকের সঙ্গে। তিনি জানান, সাগরদি যাবেন— কোনো বাহন পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে রিকশায় ভেঙে ভেঙে পথ চলতে হচ্ছে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ফলে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। গাড়ি চলছে না। তাই বাধ্য হয়েই রিকশায় যেতে হচ্ছে। কষ্ট যত আমাদের মতো কর্মজীবী মানুষদের।
তবে বেশিরভাগ রিকশাচালকই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের মতে, গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরও যাত্রীদের যেভাবে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিচ্ছেন তাতে একটু বেশি ভাড়াই ন্যায্য।
মজিদ আলী নামে এক রিকশা চালক জানান, আমরা লকডাউনে নগরীর মানুষের উপকার করছি। এছাড়া চাল-ডাল সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। একটু বেশি টাকা না দিলে আমাদের সংসার চলবে কীভাবে?
খলিলুর রহমান নামে আরেকজন রিকশা চালক বলেন, লকডাউনের সময় তাদের জমা বেড়ে যায়। তাই তাদের অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হয়।
এর আগে, গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান শুধু প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কর্মীদের আনা-নেওয়া করতে পারবে। কিন্তু সব প্রতিষ্ঠান এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারছে না। এ কারণে অফিসগামীদের দুর্ভোগ। এমনটাই জানিয়েছে ভোগান্তিতে পড়া সরকারি-বেসরকারি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সারাবাংলা/এনএস