Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারতে নিজ ধর্মের বাইরে বিয়ে নিয়ে আপত্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩০ জুন ২০২১ ০৯:২৭

ভারতে প্রচলিত প্রধান প্রধান ধর্মবিশ্বাস চর্চার মধ্যে সাদৃশ্য কম থাকলেও অনুগামীদের ভেতরকার সহনশীলতা প্রায় একইমাত্রার। সেখান থেকেই, এক সামাজিক গবেষণায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ ভারতীয় নিজ ধর্মের বাইরে বিয়ে করার ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসি।

ভারতের ২৬ রাজ্য এবং তিন অঞ্চলে ১৭ ভাষায় ৩০ হাজার নাগরিকের সাক্ষাৎকারভিত্তিক গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্মোহ মার্কিন থিংকট্যাঙ্ক পিউ রিসার্চ সেন্টার জানাচ্ছে— তাদের স্টাডিতে অংশ নেওয়া ৮০ ভাগ মুসলিম এবং ৬৫ ভাগ হিন্দুই নিজেদের ধর্মবিশ্বাসের বাইরে কাউকে বিয়ের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ হিন্দু-শিখ-মুসলিমই নিজদের সমাজ বাস্তবতায় স্ব-ধর্মের বাইরে বিয়ে নিরুৎসাহিত করার ব্যাপারে এক ধরনের তাগিদ অনুভব করেন বলে দাবি করেছেন।

সম্প্রতি ভারতের কয়েকটি রাজ্যে নিজ ধর্মের বাইরে বিয়ে আইন করে নিষিদ্ধ করাসহ সামাজিকভাবে ব্যাপারটিকে অপরাধের কাতারে ঠেলে দেওয়ার সরকারি তৎপরতা লক্ষ্য করে পিউ রিসার্চ সেন্টার নতুন এই গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ধর্মবিশ্বাস এবং জাতীয়তার মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বী উত্তরদাতারা বলেছেন, হ্যাঁ; তারা তাদের হিন্দু পরিচয়ের সঙ্গে ভারতীয় পরিচয় ঘনিষ্ঠতায় মিশে আছে বলে মনে করেন।

৬৪ ভাগ হিন্দু উত্তরদাতা বলেছেন, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে প্রকৃত ভারতীয় হওয়ার দৌড়ে তারা এগিয়ে আছেন।

পিউ রিসার্চের গবেষণায় অংশ নেওয়া ভারতীয়দের মধ্যে একইসঙ্গে সহিষ্ণুতার প্রত্যাশা এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক আলাদা বলয় সৃষ্টির প্রবণতা প্রকাশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিজ্ঞাপন

উত্তরদাতারা জানিয়েছেন, ধর্ম পরিচয়ের কারণে অনেকেই বন্ধুহীন নিঃসঙ্গ জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়। আর, ধর্মীয় সংখ্যাগুরু অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে সংখ্যালঘু ধর্মবিশ্বাস কিংবা নিজ ধর্মেরও নিচু জাতের সদস্যদের অবাঞ্চিত ঘোষণার ঘটনা ভারতে অহরহই ঘটে ।

দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের প্রাচীনপন্থি পরিবারগুলোতে নিজ ধর্মের বাইরে বিয়ের ঘটনাকে গর্হিত সামাজিক অপরাধ জ্ঞান করা হয়। এবার তার সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে আইনের নগ্ন হস্তক্ষেপ।

যেমনঃ ভারতের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় ধর্মের বাইরে বিয়ে করতে হলে সংশ্লিষ্ট নারী-পুরুষকে ৩০ দিন আগে প্রকাশ্য নোটিশ মারফত ঘোষণা দিতে হবে। ওই ঘোষণার বিপরীতে যে কোনো ধরনের আপত্তি উঠলেই বিয়ের ব্যাপারটি আদালতে গড়াবে, সেখানে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সুরাহা করতে হবে।

এর বাইরেও, বিজেপির শাসনে থাকা রাজ্যগুলোতে আরও বিশেষায়িত আইন করে ধর্মের বাইরে বিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তার মধ্যে উত্তর প্রদেশে বিয়ে করার জন্য ধর্মান্তর প্রস্তাব বা ‘লাভ জিহাদ’কে বেআইনি ঘোষণা করে অর্ডিন্যান্স জারি করে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে।

উদারপন্থি আন্দোলনের কর্মীদের অনেকেই অবশ্য নভেম্বরে পাস হওয়া এই অর্ডিন্যান্সকে মানবাধিকার পরিপন্থি আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছেন।

সারাবাংলা/একেএম

আলাদা ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বিয়ে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা পিউ রিসার্চ সেন্টার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর