Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ জুন ২০২১ ১৮:৩২

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্র ও স্থানীয় সরকারের দাবি সবসময়ই পরস্পরকে গতিময় করেছে। গণতান্ত্রিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে একটি স্থানীয় সংস্থার প্রতিনিধি জনগণের স্বার্থকে তুলে ধরতে পারে। বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে যে, সংবিধানের আলোকে সব অঞ্চলে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ কারণে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী, কার্যকর ও স্বাবলম্বী করা বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ অনুযায়ী সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আনোয়ার হোসেন খানের (লক্ষ্মীপুর-১) প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি। অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে । কেননা গ্রামই সব উন্নয়নের মূল কেন্দ্র। গ্রামের উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যখন বেগবান হবে তখন গোটা বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সম্মুখপানে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে দেশের প্রতিটি গ্রামে উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুপেয় পানি আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের সম্প্রসারণের মাধ্যমে আধুনিক শহরের সব সুবিধাদি পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়া সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের ৩-৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদসহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা উন্নত ও প্রসারিত করার জন্য সরকারের সাহায্য ও উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকারের ৫টি স্তরকে (ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন) আরও শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করে অধিক কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিবিড় ভূমিকা পালনে সক্ষম, নিজেদের আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজস্ব ব্যয় নির্বাহ করার সুযোগ সৃষ্টি, স্ব-স্ব এলাকার উন্নয়নে কার্যকর অবদান রাখা এবং আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট আইনগুলো যুগোপযোগী করে সংশোধনের প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংসদ নেতা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকারের অন্যতম প্রধান ও ভিত্তি স্তর। ইউনিয়ন পরিষদকে আরও শক্তিশালী, স্বাবলম্বী, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও নারীর ক্ষমতায়নসহ মানুষের জীবনযাত্রার সার্বিক মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেমন: ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাধারণ জনগণকে সবধরনের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে একটি ছাতা পরিষেবা প্রদান ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার চালুসহ জুলাই ২০১১ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত মেয়াদে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) চলমান রয়েছে। যার মাধ্যমে ১ম পর্যায়ে ২ হাজার ৪০৭টি, ২য় পর্যায়ে ৮৮৭ টি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং বর্তমানে ১৪৪টি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন আরো আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ প্রকল্প (৩য় পর্যায়) চলমান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃণমূলের জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবার মান বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য জানুয়ারি ২০১৭ হতে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত মেয়াদে লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএসপি-৩) বাস্তবায়িত হচ্ছে। পল্লী এলাকার দরিদ্র ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং নারীরা যাতে দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে বিচারের সুফল পেতে পারে সে লক্ষ্যে ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে বর্তমানে দেশের ২৭টি জেলার ১৩৫টি উপজেলার ১ হাজার ৮০টি ইউনিয়নে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায় ) প্রকল্পটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে জনঅংশগ্রহণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ৮ বিভাগের ৯ জেলার (ফরিদপুর, চাঁদপুর, রাজশাহী, খুলনা, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ, রংপুর, নেত্রকোনা ও কক্সবাজার) পিছিয়ে পড়া ১৮টি উপজেলা এবং ২৫১টি ইউনিয়ন পরিষদে জানুয়ারি ২০১৮ হতে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত মেয়াদে কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি) প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

উদ্যোগ কার্যকর প্রধানমন্ত্রী শক্তিশালী স্থানীয় সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর