‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাষ্ট্রের সব বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করছে’
৩০ জুন ২০২১ ১৯:৫১
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনায় রাষ্ট্রযন্ত্রের সব স্তর ও সব অঙ্গ প্রতিষ্ঠান একযোগে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে দ্বন্দ্বের কোনো সুযোগ নেই। এখানে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয়ও নেই।
বুধবার (৩০ জুন) সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত করোনাভাইরাস সংক্রমিত সীমান্তবর্তী জেলা-উপজেলায় সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রায় ৩০টি জেলা-উপজেলায় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো ধরনের সমন্বয়হীনতা নেই দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, একটি গাড়ি শুধু একটি ইঞ্জিনে চলে না। টায়ার-টিউব ছাড়া যেমন গাড়ি সম্ভব নয়, তেমনি গাড়ির আরও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ রয়েছে, যেগুলো ছাড়া একটি গাড়ি চলতে পারে না। একইভাবে রাষ্ট্রেরও অনেকগুলো অঙ্গ রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে তাদের সবাইকে সমন্বয় করে চলতে হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেভাবেই চলছে।
‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব, রাজনৈতিক দল এবং সরকারের সব প্রতিষ্ঠান মিলেই সরকার পরিচালনা করতে হয়। সেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি সফলভাবে পালন করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গত ১২ বছর ধরে। এই সময়টিতেই একমাত্র রাষ্ট্রের সব জায়গা একটি শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশও সে কারণেই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে,’— বলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, গত বছরের শুরু থেকেই যখন সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসের আক্রমণে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, তার কবল থেকে বাংলাদেশও মুক্ত ছিল না। বাংলাদেশও এই মরণব্যাধি করোনায় আক্রান্ত হয়। কিন্তু আমাদের নেত্রী সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে জীবন ও জীবিকা উভয়কে একইসঙ্গে পরিচালনা করে, সঠিক ভূমিকা পালন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আজ বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাক্কালে আগামীকাল থেকে দেশ আবার একটি কঠিন লকডাউন শুরু হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পরও আওয়ামী লীগ বসে থাকেনি, দলের সংসদ সদস্যরাও চুপ করে বসে থাকেননি। জাতীয় এই দুর্যোগে দলের নেতারা করোনা মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আর এ কারণেই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতাকে আমাদের হারাতে হয়েছে।
করোনার মধ্যে দলীয়ভাবে দেশের কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার কথা তুলে ধরে নানক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতারা একযোগে কাজ করেছেন। বিশেষ করে লকডাউনের সময় মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত, যারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারেন না, রাতের অন্ধকারে গিয়ে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগের সবাই কাজ করেছেন। এই আওয়ামী লীগই দেশের একমাত্র দল, যারা জাতির যেকোনো প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে দেশে শুরু হতে যাওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও দলীয় নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানান নানক। তিনি বলেন, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে যে লকডাউন শুরু হতে যাচ্ছে, এই সময়েও আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে থাকতে হবে, অসহায় মানুষের গিয়ে পাশে দাঁড়াতে হবে। যারা মৃত্যুবরণ করবে, তাদের দাফন-কাফনের গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে। মানুষের পাশে থেকে মানুষকে বেশি বেশি করে মাস্ক পরিধান করাকে নিশ্চিত করতে হবে।
এদিন জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীমসহ ত্রাণ উপকমিটির সদস্যরা।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর