৫ বছরে আদালতে ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৩০ হাজার
১ জুলাই ২০২১ ০৯:০৯
ঢাকা: দেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত ৫ বছরে ৩০ হাজার ২৭২টি মামলা হয়েছে। গত বছরের ২১ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর সময়ের হিসেবে তা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে।
বুধবার (৩০ জুন) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
এদিকে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজি) পক্ষ থেকে আজ আদালতে আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আগামী ১৫ জুলাই এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এ ছাড়া আইন সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব এবং নারী ও শিশুবিষয়ক সচিবের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ১৯ অক্টোবর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে ধর্ষণের অপরাধের ক্ষেত্রে সালিস বা মীসাংসা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এর আগে এ সম্পর্কিত তিনটি রায়ের বাস্তবায়ন চেয়ে রিট করা হয়।
পরে গত বছরের ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনায় সালিস বা মীমাংসা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ধর্ষণের ঘটনায় গত পাঁচ বছরে সারা দেশের থানা, আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কতগুলো মামলা হয়েছে, তা জানিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনীক আর হক। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
রিটে তিনটি মামলায় এর আগে উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়।
২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়, ধর্ষণ, যৌন হয়রানিসহ এমন প্রতিটি আমলযোগ্য অপরাধ যেখানেই ঘটুক না কেন, তার তথ্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) লিপিবদ্ধ করতে হবে। ১৮ দফা নির্দেশনা সংবলিত ওই রায়ের নির্দেশনায় বলা হয়, ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের সব ঘটনায় বাধ্যতামূলকভাবে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে। ডিএনএ পরীক্ষা ও অন্যান্য পরীক্ষার নমুনা নির্ধারিত ফরেনসিক ল্যাব বা ডিএনএ প্রোফাইলিং সেন্টারে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাঠাতে হবে।
২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের আরেক রায়ে বলা হয়েছে, নির্ধারিত ১৮০ দিনের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার বিচার শেষ না হলে জবাবদিহির বিধান অনুসরণ (ব্যাখ্যা দেওয়া) করতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর ও তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি (পুলিশ) নির্দেশনা দেন। এ বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়।
২০২০ সালের ১৮ জুলাই হাইকোর্ট অপর এক রায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ধর্ষণ এবং ধর্ষণ–পরবর্তী হত্যা মামলাগুলো আইনে নির্ধারিত ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে, মামলায় সাক্ষীর উপস্থিতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে তদারক কমিটি গঠন করা এবং জবাবদিহি নিশ্চিতে ছয় দফা নির্দেশনা দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এসএসএ