Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হলি আর্টিজানে হামলার ৫ বছর: করোনায় ঝুলে গেছে রায় কার্যকর

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ জুলাই ২০২১ ১৫:৩০

ঢাকা: ২০১৬ সালের ১ জুলাই। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্ট। ওইদিন রাতে হঠাৎ-ই ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা রেস্টুরেন্টটিতে। মুহুর্মুহু গুলিতে কেঁপে ওঠে পুরো গুলশান। ওই জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ নিহত হন মোট ২২ জন। রাতভর সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর অপারেশন ‘সার্চ লাইটের’ মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটে। নিহত হয় হামলাকারী ৫ জঙ্গি।

ওই ঘটনায় ২০১৬ সালের ৪ জুলাই নিহত ৫ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে গুলশান থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করেন গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস। ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মামলাটিতে সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর গত ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট পলাতক আসামি মো. শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদের সম্পত্তি ক্রোক এবং তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেন আদালত। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে আট আসামির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন। আর খালাস পাওয়া আসামির নাম মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান। তবে এ ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় কার্যকর এখনও সম্ভব হয়নি। ফাঁসির রায় কার্যকর করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালের ১২ মে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলার এজাহার, চার্জশিট, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও রায়সহ যাবতীয় নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তবে করোনার মধ্যেও এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরি শেষ হয়েছে।

এ বিষয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে গত বছর মার্চ থেকে স্বাভাবিক আদালত হচ্ছে না। সে কারণে এ মামলার শুনানিতে দেরি হচ্ছে। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পেপারবুক তৈরি হয়েছে। এটি এখন আদালতে উঠবে। এর পাশাপাশি কেউ যদি আপিল করে থাকে, সেটি ব্যক্তিগত আইনজীবী বা জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই হোক না কেন, তা শুনানি হবে। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে চলতি বছরের মধ্যেই মামলাটির আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট আলোচিত এ মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে হাইকোর্টে পৌঁছায়। এক হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার এই পেপারবুক শুনানির জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এখন আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হলে ডেথ রেফারেন্সটি শুনানির জন্য যেকোনো একটি বেঞ্চে যাবে।

উল্লেখ্য, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির ভয়াবহ ওই সন্ত্রাসী হামলায় ইতালির নয় জন, জাপানের সাত জন, এক ভারতীয় ও দুই বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হন। রাতভর সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটে। পরে সেখান থেকে পাঁচ জঙ্গির সাথে রেস্তোরার প্রধান শেফ সাইফুল ইসলামের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আর সাইফুলের সহকারী জাকির হোসেন শাওন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। একই ঘটনায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ছোঁড়া গ্রেনেডের আঘাতে রেস্টুরেন্টের বাইরে নিহত হন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান।

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

৫ বছর জঙ্গি হামলা মামলা রায় কার্যকর হলি আর্টিজান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর