১০০ বছরে সিপিসি: শুভেচ্ছা জানিয়ে বৃহত্তর সহযোগিতা কামনা
১ জুলাই ২০২১ ১৯:৩১
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চীনের জনগণ এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি মহাসচিব শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পারস্পরিক স্বার্থে দুই দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও সিপিসি’র মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সিপিসি’র শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ ও জাতীয় মৌলিক স্বার্থের ভিত্তিতে চমৎকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দুই দলের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতা আমাদের দুই দেশের নাগরিকদের আরও বেশি কল্যাণ বয়ে আনবে।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভিডিওবার্তায় এই শুভেচ্ছা জানান। ভিডিওবার্তায় প্রধানমন্ত্রী চীনকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে অভিহিত করেন। একইসঙ্গে সম্প্রতি সিপিসি’র পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উপহার দেওয়াসহ কোভিড-১৯ মহামারিকালে বাংলাদেশকে চীন যে সহযোগিতা দিয়েছে, তার উল্লেখ করেন।
দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান কৌশলগত অংশীদারিত্বকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নতুন পথ খুঁজছি। পাশাপাশি আমরা শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের মতো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও কাজ করছি। সাউদার্ন সিল্ক রুটের মধ্য দিয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে, যা দু’টি প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে জ্ঞান, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান আন্তরিক ও হৃদত্যপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালের চীন সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের একজন তরুণ নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সিপিসি নেতাদের সঙ্গে মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তার বই ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এ সিপিসি’র নেতৃত্বে চীনকে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চীনের জনগণের প্রবল উদ্যম, কঠোর-প্রত্যয় ও দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ মনোভাবের প্রশংসা করেছেন।
শেখ হাসিনা তার অভিনন্দন বার্তায় বলেন, সুবিবেচনাপূর্ণ রাজনীতি ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না সবার জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে দেশটিকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছে। মাত্র অল্প কয়েক দশকের মধ্যেই চীন আশ্চর্যজনক ও উৎসাহ-ব্যঞ্জক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি লাভ করেছে। দেশটি আজ উচ্চ-মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে মহাকাশ থেকে ন্যানো প্রযুক্তি, রোবোটিক্স থেকে অ্যাভিওনিক্স— সব ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটিয়েছে। এছাড়াও, দেশটি আজ বিশ্বমানের পণ্য ও সেবা প্রদান করছে। এমনকি চীনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর সাধারণ মানুষও উন্নয়নের এই সুফল ভোগ করছে।
আওয়ামী লীগ সরকারও বাংলাদেশের এমন উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’, একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। ২০৪১ সাল নাগাদ সকল নাগরিক স্বচ্ছলতা নিয়ে আসাই আমাদের লক্ষ্য।
সিপিসি’কে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এবং সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে (চীনের প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি’র মহাসচিব শি জিনপিং) এবং আপনার মাধ্যমে চীন সরকার, সিপিসি’র সদস্য ও চীনের বন্ধুপ্রতিম জনগণকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ শি জিনপিংয়ের বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার নির্দেশনায় চীনের বন্ধুপ্রতিম জনগণের সুস্বাস্থ্য, সুখ ও অব্যহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর
কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সিপিসি