কয়েকশ’ কোটি মানুষ নিরাপদ পানি-স্যানিটেশন সেবা থেকে বঞ্চিত হবে
২ জুলাই ২০২১ ১৫:৪৬
ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউনিসেফের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অগ্রগতির হার চারগুণ না হলে ২০৩০ সালে বিশ্বজুড়ে কয়েকশ’ মানুষ উন্নত উৎসের খাবার পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতা সেবা পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ এ কথা জানিয়েছে।
গৃহস্থালি খাবার পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক অগ্রগতি ২০০০-২০২০ শীর্ষক যৌথ পর্যবেক্ষণ প্রকল্প (জেএমপি) প্রতিবেদনটি গত পাঁচ বছরে পরিবারগুলোর উন্নত উৎসের খাবার পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতা পরিষেবা প্রাপ্তির সুযোগ বিষয়ক হিসাব তুলে ধরেছে।
এছাড়া ‘২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য পানি ও স্যানিটেশনের সহজলভ্যতা ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক ষষ্ঠ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অগ্রগতি মূল্যায়নও করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো প্রতিবেদনে মাসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ক্রমবিকাশমান জাতীয় উপাত্তও তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০২০ সালে, প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জনের বাড়িতে উন্নত উৎসের খাবার পানির এবং বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধার অভাব ছিল। বাংলাদেশে ৬ কোটি ৮৩ লাখ মানুষের উন্নত উৎসের খাবার পানির এবং ১০ কোটি ৩০ লাখ মানুষের নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধার অভাব রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারিটি প্রত্যেকে যাতে হাত পরিষ্কার রাখার সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করার জরুরি প্রয়োজনটিকে তুলে ধরেছে। মহামারির শুরুর দিকে বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জনের বাড়িতে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার সুযোগ ছিল না।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ড. টেড্রস আধ্যানম ঘেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধ করার অন্যতম কার্যকর উপায় হচ্ছে হাত ধোয়া, যদিও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ পানি প্রাপ্তির সুযোগ নেই। আমাদের যদি এই মহামারির সমাপ্তি ঘটাতে হয় তবে পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতা সেবার পেছনে বিনিয়োগ করাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয় যে, যদি বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তবে কয়েকশ’ কোটি শিশু ও পরিবার গুরুত্বপূর্ণ, জীবন-রক্ষাকারী ওয়াশ পরিসেবাবিহীন থেকে যাবে।
প্রতিবেদনে ব্যাপক বৈষম্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ঝুঁকির মুখে থাকা শিশু ও পরিবারগুলোই এর সবচেয়ে মারাত্মক শিকার। ২০৩০ সাল নাগাদ উন্নত উৎসের খাবার পানির সার্বজনীন প্রাপ্যতা অর্জন করতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে অগ্রগতির বর্তমান হার দশগুণ বাড়ানো দরকার। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে, যেখানে মানুষের নিরাপদ খাবার পানির ঘাটতির সম্ভাবনা দ্বিগুণ, সেখানে অগ্রগতির হার ২৩ গুণ বাড়ানো প্রয়োজন।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, ‘এমনকি মহামারির আগেও লাখ লাখ শিশু ও পরিবার পরিষ্কার পানি, নিরাপদ স্যানিটেশন এবং হাত ধোয়ার জায়গার সংকটে ভুগেছে। কোভিড-১৯ এর মতো সংক্রামক ব্যধির সঙ্গে লড়াই করাসহ প্রতিটি শিশু ও পরিবারকে তাদের স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের প্রয়োজনগুলো নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা বহুগুণ বাড়ানোর সময় এসেছে।’
সারাবাংলা/এমও