লকডাউন আর অতিবৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে আমচাষিরা
৩ জুলাই ২০২১ ১০:৩৮
ঠাকুরগাঁও: লকডাউন আর অতিবৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের আমচাষিরা। জেলার বিভিন্ন আমের বাজারে পাকা আম বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭ থেকে ১০ টাকা দরে। আর কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে। করোনার প্রভাবে বাজারে ক্রেতা না থাকা এবং অন্য জেলা থেকে আম কেনার চাহিদা কমে যাওয়ায় বাজারে এমন বিপর্যয় ঘটেছে বলে জানায় স্থানীয় আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৫ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে সুর্যাপুরী, মিশ্রিভোগ, আম্রপালি, হাড়িভাঙ্গা, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর, বান্দিগৌরি, রুপালি, বাড়ি-৪, আশ্বিনাসহ বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সুর্যাপুরী ও আম্রপালি আমের চাষ হয়েছে বেশি। এবার ৭৫ হাজার মেট্রিকটন আমের ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আম বেশি পাওয়া যাবে এমটাই আশা কৃষি বিভাগের।
শহরের কালিবাড়ি, রোড যুব সংসদ মাঠ, বালিয়াডাঙ্গী বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আম ব্যবসায়ীরা আম নিয়ে বসে থাকলেও বাজারে ক্রেতা নেই। দু’একজন ক্রেতা থাকলেও তারা স্থানীয়। বাইরের ক্রেতা একেবারে নেই বললেই চলে।
বাজারে কাঁচা সূর্যাপুরী প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আম্রপালি ৭০০ টাকা, হিমসাগর ১ হাজার ৪০০টাকা, লখনা আমের প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, ল্যাংড়া আমের প্রতিমণ ৬০০ টাকা। পাকা আমের মূল্য অর্ধেকের চেয়ে আরও কমে নেমে এসেছে।
গতবছর বাজারে সুর্যাপূরী আম ৫০-১০০ টাকা কেজি, আম্রপালি ৭০-১০০ টাকা কেজি, হাড়িভাঙা ৮০-১৫০ টাকা, ল্যাংড়া ৯০-১৫০ টাকা, হিমসাগর ৮০-১৫০ টাকা, আশ্বিনা ৫০-১৫০ টাকা এবং বাড়ি-৪ আম ১০০-২৫০ টাকা কেজি দরে প্রতি বছর বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এবার তার অর্ধেক দামেও বিক্রয় হচ্ছে না আম।
আমচাষিরা জানান, বাজারে ক্রেতা নেই, দামও নেই। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বাইরে থেকেও আম কিনতে কেউ আসেনি। বিক্রি না হওয়ার কারণে পাকা আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমের বাজার সাধারণত শুরু হয় বিকাল ৪টার পর। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য কয়েকদিন ধরে এলাকায় কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। ৫টার পর সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সবাই নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাচ্ছে। পুলিশ এসেও তখন বিক্রি বন্ধ করে দিচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আম একটি পচনশীল পণ্য। পরিবহনে যেন কোন সমস্যা না হয় সে জন্য কাজ করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বলে দেওয়া হয়েছে। নিয়মের মধ্যে কোনো সহযোগিতা লাগলে জেলা প্রশাসন তা করবে।’
সারাবাংলা/এমও