বিধিনিষেধ-বৃষ্টিতে নেই যাত্রী, দুশ্চিন্তায় রিকশাচালকরা
৫ জুলাই ২০২১ ১৯:৩৭
বরিশাল: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। ফলে অফিস-আদালত, গণপরিবহন ও শপিংমলসহ সবকিছুই বন্ধ। তবে রিকশা চলার অনুমতি আছে। বিধিনিষেধে এমনিতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারী বর্ষণ। সবমিলিয়ে এই কয়েকদিনে বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালকরা। সড়কে মানুষের চাপ কম থাকায় এবং বৃষ্টির কারণে অনেক রিকশাচলাককেই অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
সোমবার (৫ জুলাই) বরিশাল নগরীর হাতেম আলি চৌমাথা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এক রিকশাচালক তার রিকশার পর্দা (পলিথিন শিট) দিয়ে নিজেকে ঢেকে সেখানেই বিশ্রাম নিচ্ছেন। মুনসুর হাওলাদার নামের এই রিকশাচালক বলেন, পাঁচ বছর ধরে এ শহরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান তিনি। গত কয়েকদিন আয় নেই বললেই চলে। বৃষ্টি না থাকলে দু-একজন যাত্রী পেলেও বৃষ্টির সময় একেবারেই অলস সময় পার করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, সকালের দিকে নগরীর বাজারগুলোতে কিছু কিছু মানুষ বের হলেও সারাদিনে মানুষের চাপ অনেকটা কম। ফলে তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মাত্র ৭০ টাকা আয় করেছেন বলেও জানান তিনি।
নগরীর সাগরদি এলাকার রিকশাচালক মো. শামীম বলেন, ‘ভোরে বের হয়েছি, যাত্রী পাই না। তিনবার বৃষ্টিতে ভিজেছি। দুইটা ক্ষ্যাপে ৬০ টাকা পেয়েছি। দুপুর পর্যন্ত এটাই কামাই। খাব কি? নিজের বউ-পোলা নিয়ে চলব কেমনে?’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির কথা বলায় শামীম যেন খনিকটা বিস্মিত হলেন। বললেন, ‘স্যার গো… করোনা হয় না, জ্বর হয় না— আমাগো ইস্টিলের বডি। এই ভাইরাস এই গতরে (শরীরে) বেশিক্ষণ বাঁচতে পারে না, মইরা যায়।’
শামীমের মতো রিকশাচালক সাইদুলেরও একই কথা, ‘লকডাউনে (বিধিনিষেধ) যাত্রী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তিনি আরও জানান, ‘রিকশায় যাত্রী দেখলেই পুলিশ থামায়, জিজ্ঞেস করে কই থেকে, কেন। সেজন্য অনেকে রিকশায় উঠতে চায় না।
সকাল থেকে ৬ ঘণ্টায় বৃষ্টিতে ভিজে ১০০ টাকা রোজগার করেছেন। এখন মা-ভাই-স্ত্রীকে নিয়ে ৬ জনের সংসার কীভাবে চালাবেন তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানিয়েছেন সাইদুল।
তবে, গত বিধিনিষিধের সময় সরকারের পক্ষ থেকে এমনকি বিত্তবানরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেও এবার তেমন চিত্র এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।
সারাবাংলা/এনএস