মজুত থাকলেও ভ্যাকসিন নিতে উপস্থিতি কম চাঁপাইনবাবগঞ্জে
৬ জুলাই ২০২১ ০৮:৫১
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: করেনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য মানুষের উপস্থিতি কমেছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্রে। তবে ভ্যাকসিনের যথেষ্ট মজুত রয়েছে বলে জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নতুন করে নিবন্ধন করতে না পারা, পূর্বের নিবন্ধনকৃতদের ভ্যাকসিন গ্রহণ হয়ে যাওয়া এবং কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য উপস্থিতি কমেছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিধিষেধকালে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য মানুষ বের হতে পারবেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ভ্যাকসিনের নিবন্ধন কার্ডটি থাকতে হবে। যা রাস্তায় চেকিংয়ের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখাতে হবে।
সোমবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে জেলার একমাত্র ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তখনো শুরু হয়নি ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম। স্বাস্থ্যকর্মী ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত থাকলেও ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য কেউ উপস্থিত হয়নি।
ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. এহেতেশামুল হক জানান, দ্বিতীয় দফায় চীনের তৈরি সিনোফার্মার ছয় হাজার ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে। গতমাসের ১৯ তারিখ থেকে এ মাসের ৪ জুলাই পর্যন্ত ১৪ দিনে ৪৮১ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। প্রথম সপ্তাহে ৩১৩ জন ভ্যাকসিন নিলেও পরের সাতদিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন মাত্র ১৬৮ জন।
তিনি আরও জানান, প্রথম সাতদিনে ভ্যাকসিন গ্রহণের দৈনিক হার ছিল ৪৪ জন। কিন্তু গত তিনদিনে তা ১২ জনে নেমেছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার (৪ জুলাই) ১৯ জন, ৩ জুলাই ১৩ জন এবং ২ জুলাই তিনজন ব্যক্তি করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।
সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসরিন আখতার জানান, গত কয়েকদিন থেকে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষের সংখ্যা কমেছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, মেডিকেল কলেজ ও স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী, মেডিকেল স্টাফ এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ নতুন করে ভ্যাকসিন গ্রহণের অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারছেন না। এদিকে আগে থেকে নিবন্ধন করা মানুষের প্রায় সকলের ভ্যাকসিন গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পথে। ফলে নতুন করে কেউ আর নিবন্ধন করতে না পারা এবং যারা আগে নিবন্ধন করে রেখেছিল তাদের দেওয়া হয়ে যাওয়ার কারণে ভ্যাকসিন গ্রহণে উপস্থিতির হার কমছে।
ভ্যাকসিন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক সাহরিয়ার রাইহান বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের পরিমাণ কমার অন্যতম একটি কারণ হলো কঠোর বিধিনিষেধ। কারণ, আমাদের কাছে এসে কয়েকজন ভ্যাকসিন গ্রহীতা জানিয়েছেন— গাড়ি রিজার্ভ করে আসার পরেও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে। কয়েকদিন আগে একজন বলেছেন— সেই ভ্যাকসিন গ্রহীতাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিধিষেধাকালে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য মানুষ বের হতে পারবেন। এমন নির্দেশনা থাকার পরও ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে আসার পথে কেন পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে— জবাবে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নিবন্ধনকৃত কার্ড দেখাতে না পারলেই পুলিশ বাধা দিচ্ছে। নিবন্ধন কার্ড বা প্রমাণ দিতে পারলে ছেড়ে দিচ্ছে পুলিশ।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের হার কমলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সকলের জন্য নিবন্ধন উন্মুক্ত হতে পারে। এতে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ভ্যাকসিন নিতে পারবে। প্রথম ও দ্বিতীয় মিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় হাজার সিনোফার্মার ভ্যাকসিন এসেছে বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/এনএস