বেসরকারিতে অ্যান্টিজেন টেস্ট ৭০০, বাসা থেকে নমুনা নিলে ১২০০ টাকা
৭ জুলাই ২০২১ ০০:৪১
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্তকরণে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনা শনাক্তে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দিয়েছে সরকার। যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই পরীক্ষা চালুর জন্য অনুমতি নিতে আবেদন করেছে তাদের জন্য নমুনা পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তবে সেক্ষত্রে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা নেওয়া যাবে। আবার যদি একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নমুনা নেওয়া হয় তবে সেক্ষেত্রে সর্বমোট অতিরিক্ত চার্জ ৫০০ টাকার বেশি হতে পারবে না।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালকের সই করা এক নির্দেশনায় এসব তথ্য জানানো হয়।
নির্দেশনায় আবেদনের শর্তাবলী উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর (ক্যাটাগরি- এ, বি ) হালনাগাদ লাইসেন্স থাকতে হবে, পূর্ণকালীন দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) থাকতে হবে। এর প্রমাণক হিসাবে নিয়োগপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ও জাতিয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া সেগুলোকে সরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি/বিশ্ববিদ্যালয়/স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে সনদপ্রাপ্ত হতে হবে।
নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে নির্দেশনায় বলা হয়, কোডিড-১৯ এর উপসর্গ (সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, নাকে ঘ্রাণ না পাওয়া, মুখে স্বাদ না পাওয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি) থাকা ব্যক্তি এবং বিগত ১৪ দিনের মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে এসেছে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এছাড়া অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ হলে DHIS-2 সার্ভারে এন্ট্রি দিতে হবে। অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হলে রিপোর্ট না দিয়ে অনুমোদিত আরটি-পিসিআর ল্যাব থেকে টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে এবং ওই রিপোর্ট DHIS-2 এন্ট্রি দিতে হবে।
অ্যান্টিজেন কিট বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর হতে অনাপত্তি সনদপ্রাপ্ত SD BIOSENSOR (South Korea) ও PANBIO (USA) এর Standard Q COVID-19 Ag Test kits ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষার সর্বোচ্চ মূল্য ৭০০ টাকা হবে। ব্যবহৃত কিটটির নাম উল্লেখ করতে হবে রিপোর্টিংয়ের সময়।
রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের MIS শাখা হতে আইডি পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশনায়। নির্দেশনায় বলা হয়, রিপোর্টিংয়ের জন্য একজন ফোকাল পারসন থাকতে হবে। এসব শর্ত/নির্দেশনা পালন করবে এই মর্মে অঙ্গীকার নামা দিতে হবে।
এর আগে ২৪ জুন সারাবাংলায় ‘বেসরকারিতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি মিলছে, খরচ হবে ৭০০ টাকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গেল বছরের ২ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে ১০টি জেলায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে ৫ ডিসেম্বর থেকে সরকারিভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তে দেশে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হয়।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকলে সংশ্লিষ্টরা অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দেওয়ার কথা বলে আসছিলেন। ১০ জুলাই নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও ঔষধ প্রশাসনকে অ্যান্টিজেন নির্ভর পরীক্ষার অনুমতির জন্য পরামর্শ দেয়।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য কোন কিটটি সবচেয়ে ভালো বা কার্যকর, সেটি নিশ্চিত না হওয়ার কারণে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু করতে দেরি হয়েছে।’
শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. বিলকিস বেগমের সই করা এক চিঠিতে এই পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষায় সরকারের অনুমতি দেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে এরপরও দেশে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা যায়নি ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম