তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে
৯ জুলাই ২০২১ ০৯:২৭
লালমনিরহাট: পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট (গেট) খুলে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাত থেকে সতর্ক অবস্হায় রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর ( স্বাভাবিক বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্যারেজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ রাত ৯টায় পানি ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়। ক্রমেই তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো ডুবে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী মানুষজন গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাঁধ এবং বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের চৌরাহা,দক্ষিণবালাপাড়া, কুটিরপাড়,চরগোবরধন, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে ।
এছাড়া চরগোবরধন গ্রামে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা মূল ভুখণ্ড থেকে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বসবাস করেন। তাদের কাছে অধিকাংশ সময় সরকারের দেওয়া কোনো সুযোগ সুবিধা পৌঁছায় না বলে তাদের দাবি।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের বাসিন্দারা পানিবন্দির পাশাপাশি চৌরাহা ও কুটিরপাড় এলাকার লোকজন ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন।
এদিকে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই সলেডি স্পার-২ ও চৌরাহা এলাকা গিয়ে লোকজনকে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানান এবং চরাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজ নেন।
গোকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, ‘তিস্তার পানি কয়েকদিন স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে পানি। পানি থেকে বাঁচতে কিছু পরিবার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। রাতেই বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে লোকজনদের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর জানান, বন্যার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে। বন্যার্তদের সহায়তা দেওয়ার জন্য শুকনো খাবার মজুত রয়েছে।
সারাবাংলা/এসএসএ