Thursday 15 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সরকারের সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দেব কোথা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ জুলাই ২০২১ ১৪:৩৭

ঢাকা: ভূমিহীন গরিব মানুষের জন্য বানানো ঘর হস্তান্তরের আগেই ভেঙে পড়ার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, শুধু প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্প নয়, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন প্রকল্প, বিধবা-দুস্থ-বয়স্ক-প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়েও সরকারি দলের লোকেরা লুটপাট ও দুর্নীতি জড়িয়ে পড়েছে। আসলে ‘সরকারের সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দেব কোথা‘।’’

শনিবার (১০ জুলাই) দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘মেগা প্রজেক্ট থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের ছোট প্রজেক্ট সব জায়গায় দুর্নীতি আর লুটপাটের মচ্ছব চলছে। এ যেন লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। ভূমিহীন গরিব মানুষের জন্য নির্মিত ঘর, যা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, সেই ঘর নিয়েও যে সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, স্বেচ্ছাচারিতা ও দলীয়করণ হয়েছে তা গণমাধ্যমের কল্যাণে জাতি তা জানতে পেরেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই ঘরগুলো হস্তান্তরের আগেই বা হস্তান্তরের পর দু’তিন মাস যেতে না যেতেই যেভাবে ধসে পড়তে দেখা গেল, তাতেই প্রমাণ হয় দেশে উন্নয়নের নামে হরিলুট চলছে। যারা গরিব মানুষের হক নিয়ে দুর্নীতি করে তাদের দ্বারা আর যাই হোক জনকল্যাণ হতে পারে না। ভূমিহীন গরিব-অসহায় মানুষকে ঘর প্রদান নিয়ে যদি দুর্নীতি, লুটপাটের এই চিত্র হয়, তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে কি ধরনের দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে তা সহজেই অনুমেয়। সরকারের আপাদমস্তক এখন দুর্নীতিগ্রস্ত।’

ভূমিহীন, গৃহহীন, গরিব ও অসহায় মানুষের ঘর নির্মাণ প্রকল্প শুরু থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ ছিল অভিযোগ করে প্রিন্স বলেন, গরিব মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বরাদ্দ তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে। জায়গা-জমি-বাড়ি-ঘরের মালিক এমনকি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের নামও অর্থের বিনিময়ে বরাদ্দের তালিকায় তোলা হয়েছে। অনেক গরিব মানুষ মাথা গোজার একটু ঠাঁই পাবার আশায় পালিত গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী, আসবাবপত্রসহ শেষ সম্বল বিক্রি করে সেই অর্থ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছে। এমনকি আওয়ামী সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের উপজেলা-ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের কোটা নির্ধারণ রেখে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের পুরো টাকা কাজে ব্যয় না করে আত্মসাত করা হয়েছে। প্রয়োজন মতো রড, সিমেন্ট না দিয়ে বালি-মাটি এবং পুরনো ইট দিয়ে ঘর নির্মাণ করার ফলে হস্তান্তরের আগেই সেগুলো ধসে পড়ছে। বরাদ্দ কমিটি, ঠিকাদার, সাপ্লাইয়ার সকলেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। তাই ভূমিহীন ও গরিবের ঘর নিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট, জালিয়াতি ও প্রতারণা তারাই করেছে।’

প্রিন্স বলেন, ‘ঘর প্রতি ৪০ ব্যাগ সিমেন্ট বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হয়েছে ১০/১২ ব্যাগ। বাকিটা বালি, মাটি দেওয়া হয়েছে। এসব দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট ধরা পড়লেও কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জনগণের ভোট ছাড়াই মহাদুর্নীতির মাধ্যমে অনুগত প্রশাসন দিয়ে দিনের ভোট রাতে করে জোর করে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে যে সরকার, তাদের পক্ষে দুর্নীতি রোধ সম্ভব না।’

গরিব ও ভূমিহীন মানুষের ঘর নিয়ে যারা মহাদুর্নীতি, লুটপাট ও চাঁদাবাজি করেছে তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি জানান বিএনপির এই মুখপাত্র।

সারাবাংলা/এজেডে/এএম

টপ নিউজ বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর